ঢাকা, শুক্রবার ৩ মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১

১৫৬ রানেই আফগানিস্তানকে অলআউট করলো বাংলাদেশ

খেলাধুলা ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : শনিবার ৭ অক্টোবর ২০২৩ ০৩:১৫:০০ অপরাহ্ন | খেলাধুলা

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে রহমানুল্লাহ গুরবাজ এবং ইবরাহিম জাদরান যেভাবে শুরু করেছিলেন, তাতে মনে হচ্ছিলো আজ বাংলাদেশের সামনে অনেক বড় লক্ষ্য দাঁড় করাবে আফগানিস্তান।

 

কিন্তু আফগান ওপেনারদের শুরুর ধাক্কা সামলে বাংলাদেশ খুব দ্রুতই ম্যাচে ফিরে আসে এবং আফগানদের ব্যাটারদের চেপে ধরে। শেষ পর্যন্ত সাকিব, মিরাজ, শরিফুল এবং মোস্তাফিজদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের সামনে ৩৭.২ ওভারেই ১৫৬ রানে অলআউট হয়ে গেছে আফগানিস্তান।

 

ধর্মশালার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টস জিতেছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। টস জিতে তিনি প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। কারণটা ছিল, সকালের হালকা ভেজা আবহাওয়ায় পেসাররা সুবিধা নিতে পারবে- এ কারণে। কিন্তু বোলিং করতে আসার পর মোস্তাফিজ, শরিফুল কিংবা তাসকিনরা যেন খেই হারিয়ে ফেলছিলেন বারবার দুই আফগান ওপেনারের সামনে।

 

৮.২ ওভারের আগ পর্যন্ত যেন কুল-কিনারাই পাচ্ছিলো না বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত সাকিব আল হাসান ব্রেক থ্রু এনে দিলেন প্রথম। এরপরও বাংলাদেশ দলের মাথা ব্যথার কারণ হয়েছিলেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। তিনি একাই যেন আফগানদের ইনিংস টেনে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব পালন করছিলেন।

শেষ পর্যন্ত মোস্তাফিজের স্লোয়ারে ধরা খেয়ে ৪৭ রানে গুরবাজ আউট হওয়ার পর সব শঙ্কা দুর হয়ে যায়। বাকি উইকেটগুলো ভাগাভাগি করে তুলে নিতে মোটেও কষ্ট হয়নি সাকিব, মিরাজ, শরিফুল, মোস্তাফিজ এবং তাসকিন আহমেদদের।

 

ইনিংসের ৯ম ওভারের দ্বিতীয় বলে সুইপ শট খেলতে গিয়ে ডিপ স্কয়ার লেগে তানজিদ হাসান তামিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে প্রথম সাজঘরে ফেরেন ইবরাহিম জাদরান। ২৫ বলে ২২ রান করে আউট হলেন আফগান এই ওপেনার। তাদের দলীয় রান তখন ৪৭।

 

এরপর দ্বিতীয় উইকেট নিতেও সাকিবেই ভরসা করতে হলো বাংলাদেশ দলকে। আফগান ব্যাটাররা যখন ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করতে যাচ্ছিলো, তখন সাকিবের বলেই ক্যাচ তুলছেন তারা। সে ধারাবাহিকতায় আফগান টপ অর্ডার রহমত শাহের উইকেটটাও নিলেন সাকিব আল হাসান।

 

ইনিংসের ১৬তম ওভারের প্রথম বলে মিড অফে ক্যাচ তুলে দেন রহমত। সেই ক্যাচ তালুবন্দী করে নেন লিটন দাস। ৮৩ রানের মাথায় পড়লো আফগানদের দ্বিতীয় উইকেট।

 

২৫ আগের ওভারে তৃতীয় ব্যাটার হিসেবে আফগান অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহিদির উইকেট তুলে নেন অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। ওভারের চতুর্থ বলে মিরাজকে খেলতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন শহিদি। তাওহিদ হৃদয় সেই ক্যাচটা লুফে নিতেই পতন ঘটে আফগানদের তৃতীয় উইকেটের।

 

ধীরে ধীরে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিলেন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। উইকেটে টিকে থাকতে পারলে কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারেন এই আফগান ওপেনার, এর আগে অনেকবার দেখিয়েছিলেন। এবারও ধর্মশালার এইচপিসিএ স্টেডিয়ামে সে পথেই হাঁটছিলেন। অধিনায়ক সাকিব আল হাসান একের পর এক বোলার পরিবর্তন করেও রহমানুল্লাহ গুরবাজের উইকেটে স্পর্শ লাগাতে পারছিলেন না।

 

অবশেষে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা এই ব্যাটারকে সাজঘরের পথ দেখালেন পেসার মোস্তাফিজুর রহমান। সে সঙ্গে পেসাররা সাফল্য পাচ্ছিল না বলে যে আফসোস তৈরি হয়েছিলো, সেটা কাটাতে পারলেন মোস্তাফিজ। ৪৭ রানে থাকা গুরবাজকে ডিপ কভারে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন মোস্তাফিজ। তার স্লোয়ার বুঝতে না পেরেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়েছিলেন গুরবাজ। কিন্তু ডিপ কভারে দাঁড়িয়ে থাকা তানজিদ তামিম ক্যাচটি তালুবন্দী করতেই শেষ হয়ে গেলো আফগানদের সম্ভাবনাময়ী একটি ইনিংস।

 

দলীয় ১১২ রানের মাথায় আউট হন গুরবাজ। এরপর শুধুই আফগানদের অলআউট হওয়ার অপেক্ষার পালা। আজমতউল্লাহ ওমরজাই ২০ বলে ২২ রান না করলে আরও আগে অলআউট হতে হতো তাদেরকে। নজিবুল্লাহ জাদরান (৫), মোহাম্মদ নবি (৬), রশিদ খান (৯), মুজিব-উর রহমান ১ এবং নাভিন-উল হক (০) আউট হলেই যবনিকাপাত ঘটে আফগান ইনিংসের।

 

বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে কৃপণ ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। ৯ ওভারে ২৫ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তিনি। মেডেন নেন ৩ ওভার। সাকিব ৮ ওভারে ৩০ রান দিয়ে ৩ উইকেট। ২ উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম। ১টি করে উইকেট নিলেন তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান।