ইসলামিক রেভোলিউশন গার্ডস কর্পর্সের (আইআরজিসি) ডেপুটি কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী ফাদাভি ইসায়েলকে হুমকি দিয়ে বলেছেন, দেশটির সরকার যদি গাজা উপত্যকায় নৃশংসতা বন্ধ না করে; তাদের আরেকটি ধাক্কার সম্মুখীন হতে হবে। ইহুদি শাসকগোষ্ঠীকে এ অবস্থার মুখোমুখি করবে প্রতিরোধ ফ্রন্ট।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী ফাদাভির হুমকির বিষয়টি জানিয়েছে ইরানের বার্তা সংস্থা মেহর।
ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীকে ‘ক্যান্সারের টিউমার’ আখ্যা দিয়ে ইরানের এ সামরিক কর্মকর্তা বলেছেন, যতক্ষণ না পর্যন্ত তাদের পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে ফেলা না হবে প্রতিরোধ ফ্রন্টের ধাক্কা অব্যাহত থাকবে। ইসরায়েল এখনই যদি গাজায় নৃশংসতা বন্ধ না করে তাহলে তাদের জন্য আরেকটি ধাক্কা অপেক্ষা করছে।
আলী ফাদাভির কথাগুলো তখনই বললেন যখন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনি তার দেশের অভিজাত ও শীর্ষ বৈজ্ঞানিক প্রতিভাধরদের একটি গ্রুপের সঙ্গে বৈঠক করছিলেন।
মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনিও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হুমকি উচ্চারণ করেন। তিনি বলেন, যদি গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি অপরাধ অব্যাহত থাকে তবে মুসলিম ও প্রতিরোধ বাহিনীকে কেউ থামাতে পারবে না। গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের বোমাবর্ষণে মুসলিম দেশগুলো ক্ষুব্ধ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য দায়বদ্ধ হওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা। তিনি আরও বলেন, ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে অপরাধের জন্য ইহুদিবাদী শাসকদের বিচার হওয়া উচিত। এবং গাজায় বোমাবর্ষণ অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।
এদিকে আগামীকাল বুধবার (১৮ অক্টোবর) ইসরায়েল সফরে আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এ সফরের আগে খামেনির হুমকি ছোট করে দেখছে না পশ্চিমারা।
ইসরায়েল-হামাস সংঘাতে গাজায় সোমবার পর্যন্ত দুই হাজার ৮০৮ জন ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। ইসরায়েলি হামলায় আহত ১০ হাজার ৮৫৯ জন। পশ্চিম তীরে হত্যা করা হয়েছে ৫৭ জনকে। সেখানে আহতের সংখ্যা ১২০০।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ২৫৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৬৪ শতাংশ নারী ও শিশু। এর মধ্যে ৩৭ চিকিৎসাকর্মী, চিকিৎসক, নার্স ও প্যারামেডিকস রয়েছেন।
৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামলা চালায় হামাস। জবাবে গাজায় হামলা শুরু করে ইসরায়েল। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ইসরায়েলে এক হাজার ৪০০ জন নিহত হয়েছেন, আর আহত হয়েছেন ৩ হাজার ৫০০ জন।
ইসরায়েল এখন গাজা অবরুদ্ধ করে রেখেছে। সেখানে পানি, বিদ্যুৎ ও খাবার সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বহু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর ইসরায়েল গাজা সিটিসহ উত্তর দিকের বাসিন্দাদের এলাকা ছাড়তে বলেছে।