ঢাকা, শুক্রবার ১৭ মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

আওয়ামীলীগের নির্বাচনী সিড়ি হয়েও অস্তিত্ব সংকটে জাতীয় পার্টি -সোলায়মান আলম শেঠ

কাজী হুমায়ুন কবির : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ২৩ জানুয়ারী ২০২৪ ০৮:৩১:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

দ্বাদশ সংসদে বিরোধী দল কে হবে, এ নিয়ে জল্পনা কল্পনা ছিল অনেক। বিএনপি বিহীন ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দুই শতাধিক আসন পেলেও আগের সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি পেয়েছে মাত্র ১১টি আসন। যেখানে স্বতন্ত্ররা মিলে পেয়েছেন ৬২ আসন। স্বতন্ত্র আসন যতই থাকুক, দল হিসেবে জাতীয় পার্টির আসন বেশি থাকায় তারাই হবেন বিরোধী দল বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। সেই মুহুর্তে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নগর জাপার সভাপতি সোলায়মান আলম শেঠ নির্বাচন ও নির্বাচন পরবর্তী বিরোধী দলের ভুমিকা নিয়ে কথা বলেছেন।

 তিনি প্রতিবেদকের সাথে এক বক্তব্যে বলেন, জাতীয় পার্টি আওয়ামীলীগের সবসময় সিড়ি হয়ে থাকে। আমরা নির্বাচন করলে নির্বাচন হয়, না করলে নির্বাচন হয়না। বিগত বেশ কয়েকটি নির্বাচনে এমনই হয়েছে। রাতের ভোট দেখেছি, দিনের ভোট দেখেছি। এবার নির্বাচন কমিশনার বলেছে, সুষ্ঠ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। সেইসাথে প্রধানমন্ত্রীও আমাদের কথা দিয়েছে এবার অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচন হবে। বিএনপি এনিয়ে চেষ্টা করেছে, তবে তারা কেন আসেনি সেটা জানিনা। তবে গণতন্ত্রমূখী মরহুম এরশাদ সাহেব সবসময় নির্বাচনমূখী ছিলেন। দেশের ক্রান্তিলগ্নে ও  সংকটে তিনি নির্বাচনে এসে জনগণকে দেখিয়েছেন তিনি নির্বাচন বান্ধব। এ নিয়ে দেশের মানুষ অনেক কথা বলে, আমাদের অনেকে হেয় প্রতিপন্ন করে। আমরা নির্বাচনমুখী বলে বিষয়গুলো এড়িয়ে যাই। প্রতি ৫ বছর পর পর নির্বাচন আসে। যথেষ্ট উৎসব মুখর হয়। 

তিনি নির্বাচন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এবার আশা ছিল একটা ভাল নির্বাচন হবে। তবে হ্যা নির্বাচন শান্তিপূর্ন হয়েছে। কেন্দ্রে কি হয়েছে জানিনা, ভোট কেন্দ্রে এবার ভোটার তেমন ছিলনা। আমাদের এজেন্টদেরকেও অনেক কেন্দ্র থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। শুনেছি, দুপুর বেলা এদেরকে বলেছে, ভোটকেন্দ্রে লোকজন নেই এখন চলে যাও। আমিও নিজেও কয়েকটি ভোট কেন্দ্রে গিয়ে এমন অবস্থা দেখেছি। আওয়ামী লীগের যে বিদ্রোহি প্রার্থি ছিল তাকেই দেয়া হলো। তাহলে কেন ২৬টি সিট আমাদের দেয়া হলো। আমি মনে করি, একটি দেশের প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষর হলো ঐ দেশের মানুষের জন্য কোরানের আইনের মতো। কেন তার এই স্বাক্ষরিত আদেশের মান রাখা হলোনা। তারা চাইলে মিনিমাম ১৪টি সিট ছেড়ে দিতে পারতো। তিনি আরো বলেন, বিরোধী দলের  ভুমিকা কিভাবে শক্তিশালী হবে। কিভাবে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে। এভাবে চললে নেক্সট জেনারেশন কি পাবে। 

দেশেতো উন্নয়ন হচ্ছে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, উন্নয়ন হচ্ছে ঠিক তবে সেই উন্নয়নের আড়ালে দুর্নীতিও হচ্ছে। আগের মন্ত্রীদের বিষয়ে শুনেছি, তারা বিদেশে টাকা পাচার করেছে। গাড়ি বাড়ি করেছে। এতো দুর্ণীতির দায়ভার কে নিবে। এসবতো জাতির উপরই বর্তাবে। এসব বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী জানেন। তিনি হয়তো এবার এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন। দুর্নীতি হলে এতো উন্নয়ন সব বৃথা যাবে। যারা দেশকে লুঠ করছে, তাদের বিষয়েই সরকারকে নজর দিতে হবে। সবশেষ কথা হচ্ছে গণতন্ত্রমুখী চিন্তাধারা না হলে দেশ উন্নত হবেনা।  এখনতো কাউন্সিলররা নির্বাচনে দাড়াচ্ছে, একসময় দেখা যাবে, কাউন্সিররাই দেশ চালাবে। তখন জাতি তাদের থেকে কতটুকু সেবা পাবে জানিনা। তবে যাই হোক, বিরোধী দল হিসাবে দেশের স্বার্থে কতটুকু ভুমিকা রাখতে পারবে তাই এখন জনমনে প্রশ্ন।

উল্লেখ্য যে, এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৮নং বোয়ালখালী আসনে তিনি জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচনে সংসদ সদস্য প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে অংশগ্রহন করে ছিলেন। তিনি আশা করেছিলেন, এবার অন্তত জনগণের সেবায় বোয়ালখালী আসনটিতে নির্বাচিত হলে এই আসনের সকল সমস্যা সমাধান করে জনগণের পাশে থাকবেন।