মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি দাবিদার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ১৫ বছর শেষ করলেও রণাঙ্গনের এক যোদ্ধার আক্ষেপ শেষ হলো না। স্বাধীনতার ৫৩ বছরে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি না পেয়ে জীবনের অন্তিম মুহুর্তে হতাশ বয়জৈষ্ঠ হতদরিদ্র মানুষটি।
থ্রী নট থ্রী রাইফেল দিয়ে মুহুর্মুহু গুলি বর্ষন করে একাত্তরে পাক বাহিনীর বাহিনীকে কোন ঠাসা করে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। চোখের সামনে শহিদ হতে দেখেছেন তিনজন মুক্তিযোদ্ধাকে। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়ার কারনে দেশীয় রাজাকার ও পাক সেনাদের অত্যাচারে নিহত হয়েছে তার পিতা। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর হলেও মেলেনি পাপ্য সম্মানটুকু। ৭১’র এর যুদ্ধের সেই যুবক আজ বয়সের ভারে নূয়ে পড়েছে তার বয়স এখন ৮৪ বছর। স্ত্রী পরিজন নিয়ে সংসারের খরচ মেটাতে চা বিক্রি করে কোন রকমে উপর্জন করে বেঁচে আছে। নিজের জায়গা জমি না থাকায় জিকে খালের (ক্যানাল) জায়গাতেই ৪১ বছর ধরে বসবাস করছেন। যুদ্ধে জয় করলেও জীবন যুদ্ধে পরাজিত এই যোদ্ধার নাম আতর আলী। সে কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার সাঁওতা গ্রামের মৃত.শুকুর মুহাম্মদের ছেলে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর পৈত্রিক ভিটা বাড়ি না থাকায় চলে আসে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার বটতৈল গ্রামে। বটতৈল মোড়েই জিকের ক্যানালের জায়গাতে বসবাস করছেন তিন মেয়ে এক ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে। ২০০৬ সাল থেকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গেজেটভুক্তির জন্য আবেদন করলেও কোন লাভ হয়নি। বারবার যাচাই বাছাইয়ে টিকে গেলেও কোন এক অদৃশ্য কারনে মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তার নামটি উঠাতে পারেনি। কুমারখালীর তৎকালিন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোকাদ্দেস হোসেনের সাথে যুদ্ধ করেছেন। তাকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পত্যয়ন দিয়েছেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কুষ্টিয়া জেলা ইউনিটের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নাছিম উদ্দিন আহমেদ , কুমারখালী উপজেলা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোকাদ্দেস হোসেন, কুষ্টিয়া মুজিব বাহিনীর প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ বারী, কুষ্টিয়া ৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রউফ, কুমারখালী উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আবদুল মান্নান খান। ২০০৬ সালে আতর আলীর যাচাই বাছাইয়ের ক্রমিক নম্বর ৪১, ২০১৭ সালে যাচাই বাইয়ের ক্রমিক নং ৩০ এবং জামুকা প্রেরিত তালিকা নং ডিজি ১১৩১৩৯৫। ২০২৩ সালের ক্রমিক নং ৭৪ জামুকা তালিকা নং ডিজি ১১৩১৯৫। মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাইয়ে তার তিনজন সহযোদ্ধা হিসেবে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম , মান্নান শেখ ও নুরুদ্দিন শেখ। ২০১৭ ও ২২ সালে তাকে সঠিক ঘোষনা করা হয়। কিন্তু পরবর্তিতে তার নামটি বাদ পরে। এলাকাবাসীর সাথে কথা হলে তারা জানান, আতর আলী একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি যুদ্ধ করেছেন। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখও তার নুন্যতম সম্মানও পায়নি । আতর আলী জানান, যারা যুদ্ধো করেনি তারা আজ মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে পরিচয় দেয় সম্মান পায়। আর আমি যুদ্ধো করেও বার বার টাকার জন্য মুক্তিযোদ্ধা তালিকায় নাম লেখাতে পারি না। প্রাথমিক যাচাই-বাছাই আমি মাননীয় প্রধানন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করছি। তিনি আমার বিষয়ি খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নিবেন।
(প্রথম পর্ব)