ঢাকা, রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

চকরিয়ায় লেগুন গাড়ী চালককে হত্যার ঘটনায় আদালতে ৮জনের বিরুদ্ধে মামলা

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : সোমবার ৩১ জুলাই ২০২৩ ০৭:৫০:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন
কক্সবাজারের চকরিয়ার হারবাংয়ে মহাসড়কের পাশে লেগুনা (ছাড়পোকা) গাড়ী চালক রিজবাহ উদ্দিন (২১) কে ছুরিকাঘাত ও গর্দান কেটে নির্মমভাবে হত্যাকান্ডের ঘটনায় ৮জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
 
নিহতের মা ও কাকারা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড মাইজ কাকারা গ্রামের নুরুল আমিনের স্ত্রী হাছিনা আক্তার (88) বাদী হয়ে চকরিয়ার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৩১জুলাই'২৩ইং এ মামলাটি (নং সিআর ১৮৩৬/২৩) করেন। 
 
মামলায় আসামীরা হলো কাকারা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড পুলেরছড়া গ্রামের দেলোয়ার হোছনের পুত্র নাজেম উদ্দিন (৪০), মোহাং কালুর ছেলে আরিফুল ইসলাম (২৪), কাকারা পাহাড়তলী গ্রামের শাহ আলমের পুত্র রাকিবুল ইসলাম (রাহাত) (২১), মাইজ কাকারার বাদশা মিয়ার পুত্র নাছির উদ্দিন (৩০), কাকারা ৪নং ওয়ার্ডের মসজিদ রাস্তার মাথা গ্রামের মোঃ নোমানের স্ত্রী কহিনুর ইয়াছমিন খুকি (৩৫), মাইজ কাকারার নুরুল আমিনের পুত্র রিয়াজ উদ্দিন (২১), চকরিয়া পৌরসভা ১নং ওয়ার্ডের কাজীর পাড়ার টুক্কু মিয়ার পুত্র নুরুল আমিন ড্রাইভার, কাকারা পাহাড়তলীর মৃত মোঃ কালুর পুত্র মোঃ রফিক (৩৫)কে। 
 
মামলার আর্জি সূত্রে জানায়, মামলার ৮নং আসামী রফিকের বাড়িতে বিভিন্ন ছিনতাই ও চোরাইকৃত মালামাল মওজুদ রাখতেন। নিহত রিজবাহ উদ্দিন (২১) ছাড়পোকা গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। নিহত রিজবাহ উদ্দিন (২১) আসামীগণের নানান অপরাধ মূলক অপকর্মের ব্যাপারে জ্ঞাত ছিল। যার কারণে আসামীরা পরিকাল্পনাভাবে এ হত্যাকান্ড সংঘঠিত করে। ঘটনার পূর্বে ৫নং আসামীর বাড়িতে গোপনে বৈঠকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তারই ধারাবাহিকতায় আসামীগণ পরস্পর যোগসাজসে রিজবাহ উদ্দিন (২১) কে চিরিংগা বাস স্টেশন হইতে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যার কু-মানসে কৌশল অবলম্বন করে ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে ২৮জুলাই রাত ১১ঘটিকায় ধারালো ছুরি দ্বারা হত্যা করে। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য পিছনে ধারালো ছুরি দ্বারা আঘাত, চেহারা পরিচয় না পাওয়ার জন্য হাতুড়ি দ্বারা চেহারা থেতলে দেয়।
 
মৃত্যু নিশ্চিত হলে আসামীরা মৃতদেহ ফেলে পালিয়ে যায়। আরো জানাযায়, ঘটনার পূর্বে চিরিংগা নিউ মার্কেটের সামনে ঘোরাফেরারত অবস্থায় শাহজালাল ফার্মেসীর সিসি ক্যামেরায় ভিডিও ফুটেজ ধারণ হয়। পরদিন ২৯জুলাই সকালে পথচারী লোকজন অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ দেখতে পেয়ে চকরিয়া থানা পুলিশকে খবর দেন।  পুলিশ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী ও ময়না তদন্ত শেষে নিহত রিজবাহ উদ্দিন (২১) এর লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। 
 
মামলার বাদী নিহতের মা হাছিনা আক্তার ও পিতা নুরুল আমিন স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কাছে আমাদের একমাত্র সন্তান রিজবাহ উদ্দিনের হত্যাকারীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবী করছি।
 
তারা বলেন, আমার নিহত ছেলের জানাজার নামাজে স্থানীয় কাকারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিন প্রকাশ্যে বলেছেন রিজবাহ উদ্দিন হত্যাকান্ডে কাকারার কোন লোকজনকে আসামী না করতে। এজন্য তিনি নিহতের পরিবারকে কঠোর হুশিয়ারীও দেন বলে জানান। 
 
এবিষয়ে চেয়ারম্যান সাহাব উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার বলেন, তিনি জানাজার মাঠে কাকারার কোন নিরীহ লোকজনকে আসামী না করার জন্য বলেছেন।
মামলায় বাদী পক্ষে বিজ্ঞ আইনজীবি এডভোকেট মোঃ গিয়াস উদ্দিন জানান, আদালত হত্যা মামলাটি আমলে নিয়েছেন এবং উক্ত হত্যাকান্ডের বিষয়ে থানা পুলিশ প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিয়েছেন কিনা ৩কার্য দিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
 
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাবেদ মাহমুদ বলেন, বিজ্ঞ আদালতের আদেশের বিষয়টি এখনো পাননি। আদেশটি হাতে পেলেই পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।