বেপরোয়া ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) মার্কেটিং বিভাগের ৫৩ তম ব্যাচের (২০২৩-২৪) শিক্ষার্থী আফসানা করিম রাচির মৃত্যুর ঘটনায় বিচারের দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার (২৪ নভেম্বর) সকাল সাড়ে আটটায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জড়ো হন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে তারা সেখান থেকে একটি মিছিল নিয়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। দুপুর ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড কামরুল আহসানের আশ্বাসে তালা খুলে দেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের অন্যান্য দাবিগুলো-
- ২৪ ঘন্টার মধ্যে সিন্ডিকেট মিটিং ডেকে জাবি মেডিকেল সেন্টারে মূমুর্ষ ব্যক্তির পর্যাপ্ত চিকিৎসার সুব্যবস্থার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে
- ক্যাম্পাসে নিবন্ধিত এবং স্পিডোমিটার সংবলিত পরিবহন ব্যবস্থা চালু করতে হবে
- পরিবহন শ্রমিকদের জন্য ইউনিক আইডি এবং ড্রেস কোড নিশ্চিত করতে হবে
- সম্পূর্ণ ক্যাম্পাসে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং পর্যাপ্ত পরিমাণের আলোর ব্যবস্থা করতে হবে ও সিসিটিভি নিয়মিত মনিটরিং এর আওতায় রাখতে হবে
- পর্যাপ্ত সংখ্যক দক্ষ নিরাপত্তা কর্মী রাখতে হবে এবং ক্যাম্পাসে বহিরাগত প্রবেশের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে
- গাছ না কেটে রাস্তা প্রশস্তকরণ ও ফুটপাত নির্মাণ করতে হবে
- রাস্তার মোড়ে সাইড মিরর এবং রোড সাইনের ব্যবস্থা করতে হবে
- আফসানা করিম রাচিকে মরণোত্তর ডিগ্রি প্রদান করতে হবে
- রাচির স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মেধাবৃত্তি প্রদানের পদক্ষেপ নিতে পারেন
- রাচির স্মরণে ক্যাম্পাসে স্থায়ী স্মৃতিফলক নির্মাণ করতে হবে এবং নির্মাণাধীন সেন্ট্রাল লাইব্রেরির একটি অংশের নাম রাচির নামে নামকরণ করতে হবে
- আফসানা করীম রাচির বিদায়ি আত্মার মাগফেরাত কামনার জন্য কেন্দ্রীয় ভাবে দোয়া মাহফিলের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে
- কয়েকজন সাধারণ শিক্ষার্থী এবং ৫৩ ব্যাচের কয়েকজনকে তদন্ত কমিটিতে পর্যবেক্ষক হিসেবে রাখতে হবে এবং সকল দাবি মানা হচ্ছে কিনা সেই বিষয়ে অবগত করতে হবে।
এ সময় মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুল হোসেন নিরব বলেন, আমাদের ১১ দফার মূল দাবি ছিল, রাচির হত্যাকারীকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না। আমরা প্রশাসনকে দুই দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম। এখনো পর্যন্ত হত্যাকারীকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করতে প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে। তাই আমরা আজকে নতুন প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছি। আমাদের দাবি আদায় হওয়ার আগপর্যন্ত নতুন প্রশাসনিক ভবন তালাবদ্ধ থাকবে।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, আমরা তাদের দাবি মোতাবেক ইতমধ্যেই মামলা করেছি এবং তাদের সাথে যোগাযোগ করেছি। ইতমধ্যেই সেই রিকশার যাত্রীকে আমরা শনাক্ত করতে পেরেছি। বাকি বিষয়গুলোর দৃশ্যমান অগ্রগতি আগামী মঙ্গলবারের মধ্যেই সবাই দেখতে পারবে বলে আমরা আশাবাদী। তদন্ত কমিটিতেও শিক্ষার্থীদের মধ্য দুইজনকে আমরা যুক্ত করেছি। আমরা প্রশাসনিকভাবে তাদের পাশে আছি।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/একে