কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, বৃহত্তর কুষ্টিয়া অঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা সেবা পাবার একটি আশার প্রদীপ। দুঃখের বিষয় প্রদীপটির আলো প্রথমে মানুষের মনে আশা সঞ্চার করলেও দিন গড়ানোর সাথে সাথে ফিকে হয়ে গেছে। ২০১১ সালে অনুমোদন পাওয়া তিন বছর মেয়াদি প্রকল্পটি ২০২১ সাল শেষ হলেও এখনো শেষ হওয়ার কোন লক্ষ্মণ নাই। ২৭৫ কোটি টাকার প্রকল্পটি ৬৮২ কোটি টাকায় সম্প্রসারিত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে ২০২২ সালের শুরুতেই এ মেডিকেল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্থায়ী ক্যাম্পাসে ফিরবেন বলে আশা প্রকাশ করেন কর্তৃপক্ষ।
একটি সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষ সপ্তাহের মধ্যে কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একাডেমিক ভবন এবং ছাত্র-ছাত্রীদের হোস্টেলের অবকাঠামো নির্মানের কাজ শেষের দিকে। নিয়মিত তদারকি করছে কলেজ ও ঠিকাদারি কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সরবরাহের কার্যাদেশ পাওয়া প্রতিষ্ঠান তাদের মালামাল সরবরাহের কাজ শুরু করেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের প্রকল্প পরিচালক ডাঃ আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ২০২২ সালের জানুয়ারীর মধ্যেই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম চলবে মূল ক্যাম্পাসে। এটা আমাদের জন্য বড় প্রারম্ভিক অর্জন। তাই আমাদের আর পেছনে ফিরে তাকানোর কোন সুযোগ নাই।
কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, নতুন বছরে নতুন ক্যাম্পাসে আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হবে এ কথা ভেবে আমরা দারুন উচ্ছ্বাসিত। বর্তমান অস্থায়ী ক্যাম্পাসটি জরাজীর্ণ, গাদাগাদি করে থাকতে হয়। এখানে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। তবে এর আগে বহুবার শুনেছি স্থায়ী ক্যাম্পাসে যাওয়ার কথা প্রতিবারই যাওয়া হয়নি। আমাদের সিনিয়ররা এমনই আশার বানী শুনতে শুনতে বিদায় নিয়েছে। আশাকরি এবার আমাদের স্থানী ক্যাম্পাসে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হবে।
কুষ্টিয়া গণপূর্ত বিভাগের একটি সূত্র মতে খবরে জানা গেছে, ২০২১ সালের অক্টোবরের মাঝামাঝিতে ৬৮২ কোটি টাকা ব্যয় ধরে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ নির্মাণ প্রকল্পের দ্বিতীয় উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) অনুমোদন পায় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটির সব ধরনের নির্মান কাজ শেষ করে স্বাস্থ্য বিভাগের কাছে হস্তান্তর করার কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়। প্রকল্পে গণপূর্ত বিভাগের বাস্তবায়নযোগ্য কাজগুলো সম্পন্ন করতে ৪৮৮ কোটি টাকা ও বাকি ১৯৪ কোটি টাকা একাডেমি কার্যক্রম ও চিকিৎসা খাতের যন্ত্রপাতি সহ অনান্য সরঞ্জাম ক্রয় বাবদ খরচ হবে।
এর আগে ২০১১ সালে তিন বছর মেয়াদি কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ নির্মান প্রকল্প শুরু হয়। এরপর সীমাহীন অনিয়ম - দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা - অস্বচ্ছতা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে নির্মাণ কাজ। সর্বশেষ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গঠিত তদন্ত কমিটি বিভিন্ন দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমান পায়। এরপর নির্মান কাজে গতি আসে।