আবারও আওয়ামী লীগে ফিরলেন গাজীপুর সিটির করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মো. জাহাঙ্গীর আলম। এ নিয়ে তিনি দ্বিতীয় বারের মতো বহিষ্কারের পর ক্ষমা পেয়ে দলে ফেরার সুযোগ পেলেন।
আজ শনিবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জাহাঙ্গীরের সাধারণ ক্ষমা পাওয়ার বিষয়টি জানা গেছে।
ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত ও জাহাঙ্গীর আলম বরাবর পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ‘শুভেচ্ছা গ্রহণ করবেন। উপর্যুক্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের স্বার্থ, আদর্শ, শৃঙ্খলা তথা গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্র পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার জন্য ইতিপূর্বে আপনাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়, ভবিষ্যতে সংগঠনের স্বার্থ পরিপন্থী কর্মকাণ্ড ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ না করার শর্তে ক্ষমা প্রার্থীদের প্রতি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে। সেই সূত্রে আপনার প্রতিও ক্ষমা প্রদর্শন করা হলো।
চিঠির শেষ অংশে লেখা হয়েছে, উল্লেখ্য, ভবিষ্যতে কোনো প্রকার সংগঠনবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হলে, তা ক্ষমার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।’
এর আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর জাহাঙ্গীর আলমকে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সদস্য পদ থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়।
পরে তাকে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। অনেক নাটকীয়তার পর গত ২০২২ সালের ১৭ ডিসেম্বর গণভবনে অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির বৈঠকে প্রথমবার সেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
পরবর্তীতে চলতি বছরে অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলম মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে না পেয়ে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। কিন্তু একটি ঋণ খেলাপি প্রতিষ্ঠানের জামিনদার হওয়ার তার মনোনয়ন বাতিল হলে নির্বাচনে তার মা জায়েদা খাতুনকে স্বতন্ত্র প্রার্থী করেন। তিনি নির্বাচনে মায়ের পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিয়ে দলীয় প্রার্থী ও সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার বক্তব্য দিতে থাকলে চলতি বছরের ১৫ মে তাকে পুনরায় আওয়ামী লীগ থেকে স্থায়ী বহিষ্কার করা হয়। এর পাঁচ মাস পর দ্বিতীয় দফায় তাকে ক্ষমা করে দিয়ে দলে ফিরিয়ে নিল আওয়ামী লীগ।
চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাড. আজমত উল্লা খান ও সাধারণ সম্পাদক আতাউল্লাহ মন্ডল কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে নেওয়ার কথা জানান।
আতাউল্লাহ মন্ডল বলেন, ‘আমি এখনো চিঠি পাইনি, শুনেছি। কেন্দ্রের নেতৃবৃন্দ চিন্তা ভাবনা করেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আমরা কেন্দ্রের নির্দেশনা মেনে কাজ করব।’
এড. আজমত উল্লা খান বলেন, ‘আমি চিঠি পাইনি। তবে, ক্ষমা করার কথা শুনেছি। দলের যে কোনো সিদ্ধান্ত মানতে আমরা প্রস্তুত। আমি কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কাজ করব।’