বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর্জা আব্বাস বলেছেন, আমরা দেশ স্বাধীন করেছি গনতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা ও অর্তনৈতিক মুক্তির জন্য। কোন রাজা রানীর রাজত্ব করার জন্য আমরা দেশ স্বাধীন করিনি। দেশে আজ কতৃত্ববাদী ফ্যাসিবাদী শাসন কায়েম করা হয়েছে। দেশ আজ হিরক রাজার দেশে পরণিত হয়েছে। এ ভাবে আর চলতে দেয়া যায় না। এখন দড়ি ধরে টান মারার সময় এসেছে। বর্তমান সরকারের অবস্থায়ও হীরক রাজার মতই হবে।
মীর্জা আব্বাস মঙ্গলবার ঝিনাইদহ শহরের কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে খুলনা অভিমুখে রোডমার্চ উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন। তিনি বলেন, এই অনুষ্ঠানে পৌছাতে আমাকে আড়াই কিলোমিটার জনসমুদ্র পাড়ি দিতে হয়েছে। দেখে মনে হয়েছে আমরা প্রাক বিজয় উৎসব পালন করছি। তিনি বলেন সারা দেশের মানুষ আজ আবেগতাড়িত, উদ্বেলিত। অন্যদিকে দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে বেদনাহত।
তিনি আরও বলেন, মীর্জা আব্বাস বলেন আমি ম্যাডামকে বলে এসেছি সারা দেশের মানুষ আজ আপনার জন্য চিন্তিত। আপনি বাংলাদেশের জন্য আপনি যা করেছেন তা মানুষ ভুলবে না। মুর্হুমুহু করতালী ও শ্লোগানের মধ্য দিয়ে মীর্জা আব্বাস বলেন, দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে এই সরকারকে বাধ্য করা হবে। একদফার আন্দোলন চুড়ান্ত করেই দেশের মানুষ ঘরে ফিরবে ইনশাল্লাহ।
ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড এম এ মজিদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জাহিদুজ্জামান মনার পরিচালনায় রোডমার্চের উদ্বোধনী সমাবেশে কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সৈয়দ মেহদী আহম্মেদ রুমী, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদ (খুলনা) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দীন, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দীন টুকু, কেন্দ্রীয় ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড আসাদুজ্জামান ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, মেহেরপুরের মাসুদ অরুন, চুয়াডাঙ্গার মাহবুব হাসান খান বাবু, শরিফুজ্জামানসহ জেলা ও উপজেলার বিএনপি নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
সমাবেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, আমরা একদফার দাবীতে রাস্তায় নেমেছি। তারেক রহমান মৃত বিএনপিকে জীবীত করেছেন। এই ফ্যসিবাদী বিরোধী আন্দোলন করতে গিয়ে শত শত নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ৪০ লাখ নেতাকর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। তারপরও বিএনপি মাঠ ছাড়েনি। কারণ একটাই হাসিনার পদত্যাগ ছাড়া বিএনপি ঘরে ফিরবে না।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আর কত রক্ত দেশের মানুষ দিলে শেখ হাসিনা ক্ষ্যান্ত হবে ? এই খুনি জালিম সরকার যতক্ষন পর্যন্ত বিদায় না হচ্ছে ততক্ষন পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়বো না। তিনি বলেন শয়তানীর একটা সীমা আছে। সরকার চোর ডাকাতদের মুক্তি দিচ্ছে অথচ তিনবারের প্রধানমন্ত্রীকে মুক্তি দিচ্ছে না। তিনি বলেন সময় থাকতে পদত্যাগ করে সংসদ ভেঙ্গে দিন, নির্বাচন কমিশন পুর্নগঠন করুন। নইলে মাইর একবার শুরু হলে রেহায় পাবেন না। তিনি তারেক রাহমানকে বিমান বন্দরে রিসিভ করার জন্য উপস্থিত জনতাকে অগ্রিম দাওয়াত দেন।
বিএনপির খুলনা অভিমুখে রোডমার্চকে ঘিরে কেন্দ্রীয় নেতাদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে ঝিনাইদহ। সর্বত্রই উচ্ছাস আর আড়ম্বর পরিবেশ লক্ষ্য করা যায়। বিশেষ করে ঝিনাইদহ ছাড়াও কুষ্টিয়া, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে মঙ্গলবারের রোডমার্চকে ঘিরে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসে। কেন্দ্রীয় ও বাইরের নেতাকর্মীদের বরণ করতে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপি জমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। রোডমার্চের উদ্বোধণী অনুষ্ঠান স্মরনীয় করতে ঝিনাইদহ শহরের কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল সাজানো হয় বর্ণিল সাজে।