ঢাকা, শনিবার ২২ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০ই ফাল্গুন ১৪৩১

বিএনপি বা নতুন কোন দলের সঙ্গে আমরা জোটে যাচ্ছি না: নূরুল হক নুর

এম এম লিংকন | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ০৬:৫২:০০ অপরাহ্ন | রাজনীতি

গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর আমরা কারো নেতৃত্বে কোনো জোটে যাচ্ছি না এটা পরিস্কার। ছাত্ররা নতুন দল করছে। তাদের আমরা সাধুবাদ জানাই। তবে তাদের সঙ্গে দল করা, তাদের সঙ্গে জোট করা এই সমস্ত আলোচনা নেই। কারণ তারা এখনো দলই গঠন করে নাই। আমরা দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করবো। 

বৃহস্পতিবার (১৯ ফেব্রুয়ারী) রাজধানীর নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। এ সময় গণ অধিকার পরিষদের আটজন প্রতিনিধি অংশ নেন। 

নির্বাচনের জন্য একটা দক্ষ প্রশাসন দরকার মন্তব্য করে তিনি বলেন, গত ১৬ বছরের যে প্রশাসন কারচুপির নির্বাচন করেছে, তাদের দারা কী করে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব। আগে বলতো আওয়ামী চেতনার উদ্বুদ্ধ। এখন কেউ বলছে গণ অধিকার পরিষদের লোক, কেউ বলে বিএনপির লোক, কেউ বলে জামায়াতের লোক। আবার কেউ বলে আমরা ছাত্রদের প্রতিনিধি। কাজেই এখনকার প্রশাসনের মধ্যেও যদি এই রাজনৈতিক মনোভাব থাকে, তাহলে তো নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে। তাই পরিস্কারভাবে আমরা বলেছি যে, নির্বাচনে যে দায়িত্ব পালন করবেন-রিটারিং কর্মকর্তা, প্রিজাইডিং কর্মকর্তাসহ অন্যান্যরা, তারা যদি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত না থাকে; সেটা যেন কমিশন আগেভাগেই নিশ্চিত করেন। বিতর্কিত নির্বাচনে যারা জড়িত ছিল, তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র যে ব্যবস্থা নেবে, তা রাষ্ট্র নেবে। তাদের অনেকে বহাল তবিয়তে আছে। অনেককে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করা হয়েছে। অনেক কিন্তু তলে তলে সুযোগও দেওয়া হচ্ছে। কাজেই সে থাকে কে থাকে তারা তো বুঝবে না। কিন্তু আমার পরিস্কারভাবে বলেছি তারা যেন নির্বাচনি দায়িত্বে না থাকে। 

নুর আরো বলেন, দলগুলোর পক্ষ থেকে ইতিমধ্যে বলা হয়েছে কিংবা রাজনতিক অঙ্গনেও এই আলোচনা চলছে যে স্থানীয় নির্বাচনগুলো আগে হওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশন যেহেতু স্বাধীন প্রতিষ্ঠান, তারা কারো নির্দেশনায় নির্বাচন করবেন না। তবে তারা যেহেতু সংককালীন দায়িত্ব নিয়েছে, একটা অর্থবহ নির্বাচনের জন্য সেখানে রাজনৈতিক ঐক্যমত জুররি। প্রধান উপদেষ্টা যে একটা সম্ভাব্য যেট দিয়েছেন, সেটাকে সামনে রেখেই তারা একটা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঐক্যমত যদি স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে তৈরি হয় তাহলে তারা বিবেচনা করবেন্ যদি ঐক্যমত না হয়, তারা তো তা করতে পারবেন না।

নামস্বর্বস পার্টি যারা নিবন্ধন নিয়েছে, এবং আনাপাতিকভাবে নির্বাচনের কথা বলা হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,  এক্ষেত্রে সেখানে কিন্তু সবগুলো দলের মার্কা থাকবে। নির্বাচন কমিশনের যে শর্ত আছে ১০০ উপজেলা এবং এক তৃতীয়াংশ জেলায় অফিস ও কমিশন থাকতে হবে। এটা যে রাজনৈতিক দলগুলো প্রতিপালন করছে না, তাদের নিবন্ধন স্থগিত করা উচিত। এতে নামস্বর্বস বা কিংস পার্টির নিবন্ধন কিন্তু বাতিল হয়ে যাবে।

আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কি, করবে না সেই সিদ্ধান্ত অবশ্যই নির্বাচন কমিশন একা নিতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলছেন, এজন্য রাজনৈতিক ঐক্যমত তৈরি হতে হবে। সরকারেরও এখানে ভূমিকা নিতে হবে। ইতিমধ্যে সেই ঐক্যমত তৈরি হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে গত মিটিংয়েও রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমত হয়েছে যে আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা যেন নির্বাচনে অংশ নিতে পারে সেজন্য তাদের বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারে। এছাড়া ভূঁইফোড় ও কিংস পার্টির হালনাগাদ তথ্য নিয়ে নিবন্ধন স্থগিত তারা করতে পারে।

এই নির্বাচন কমিশন একটা উদাহরণ হবে, এজন্য দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে বলেছি জানিয়ে নুর বলেন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার কথা বলেছি। এছাড়া যেহেতু একটা রাজনৈতিক ঐক্যমত তৈরি হয়েছে, এবং এটা এখন পপুলার ডিমান্ড তৈরি হয়েছে যে ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগ এবং দোসরদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা। তাহলে তো নিবন্ধন তো অটো বাতিল হবে অবশ্যই।

তিনি বলেন, ইসি পরিস্কারভাবে বলেছেন যে কোনেভাবেই রাজনৈতিক চাপে কিংবা দলৈ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে চানা না। যেহেতু নিবন্ধন বাতিল করার আইন আছে, অনেকগুলো প্রক্রিয়া আছে, সরকার নির্বাহী আদেশে করতে পারে যেমন বিগত সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছিল। আমাদের কাছে এই বিষয়ে মনে হয়েছে যে, নির্বাচন কমিশনের চেয়ে সরকার এবং রাজনৈতিক দলগুলো এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। সরকারের সিদ্ধান্ত ও রাজনৈতিক ঐক্যমত দু’টোই হয়েছে আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের নিষিদ্ধের প্রশ্নে। তবে ইসির প্রতি আমরা জোর দিয়েছি তারা যেন অন্তত কিংস পার্টিগুলোর নিবন্ধন স্থগিত বা বাতিল করে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচন আগে হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। তবে ছোট পরিসরে স্থানীয় নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের আগে হতে পারে। কেননা, জন্ম নিবন্ধনের মতো সেবা মানুষ পাচ্ছে না। একজন আমলা আর কতটুকু করতে পারে। অন্তত সিটি করপোরেশ, পৌরসভা বা উপজেলাগুলোর নির্বাচন হতে পারে।