চলতি মাসের শুরুতে একজন ক্রেতা যে দামে চাল কিনেছেন, মাসের শেষে এসে চাল কিনতে গেলে তাকে বড় ধাক্কাই খেতে হবে। কারণ, হাঁটি হাঁটি পা পা করে প্রতিদিনই বাড়ছে চালের দাম। তিন সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে সরু চালের দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৩৮ শতাংশ। মাঝারি মানের চালের দাম ৩ দশমিক ৯২ এবং মোটা চালের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ।
রাজধানীর বিভিন্ন বাজারের খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, অটো রাইস মিল মালিকরা চাল মজুত করায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভরা মৌসুমেও বাজারে চালের সরবরাহ নেই। আগের অর্ডারের চালও ঠিকঠাক মতো পাচ্ছেন না তারা। অন্যদিকে, মিল মালিকরা বলছেন, মিল পর্যায়ে নতুন করে চালের দাম বাড়ানো হয়নি। উৎপাদন কম, ধানের দাম বাড়া, টানা বৃষ্টিসহ বিভিন্ন কারণে চালের দাম বাড়ছে।
দেশে এখন চলছে বোরো ধানের ভরা মৌসুম। প্রতিবছর এসময় চালের দাম কমতির দিকে থাকে। কিন্তু এবার চিত্র উল্টো। ভরা মৌসুম হলেও রাজধানীর বাজারে প্রতিদিন দু-এক টাকা বাড়ছে চালের দাম। একই অবস্থা গ্রামগঞ্জের বাজারেও। দেশের অন্যতম চালের মোকাম নওগাঁ, কুষ্টিয়ার খাজানগর, দিনাজপুর ও ঢাকার পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে চালের দামের এ চিত্র সম্পর্কে জানা যায়।
খুচরা বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৪ টাকায়। সরু চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭২ টাকায়। ভালো মানের সরু (নাজিরশাইল ও জিরাশাইল) চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৮ থেকে ৮০ টাকায়।
টিসিবির সঙ্গে কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের (ড্যাম) হিসাব বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, একই সময়ের ব্যবধানে (গত এক সপ্তাহে) সব ধরনের চালের দাম কেজিতে গড়ে ৭ টাকা বেড়েছে। এর মধ্যে সরু চালের দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি।
মালিবাগ চৌধুরীপাড়া আবুল হোটেল এলাকায় চালের আড়তদার কুষ্টিয়া চাল ভান্ডারের সফিউজ্জামান বলেন, ‘চালের জন্য ফোন দিলেই মিল মালিকরা বলেন নেই। দাম বাড়িয়ে দিতে পারলে কিছুটা দিতে রাজি হয়। যদিও পরবর্তীসময়ে বাড়তি দামে ঠিকঠাক মতোই চাল দেয় তারা।’