চট্টগ্রাম নগরীর অক্সিজেন মোড়, বঙ্গবন্ধু এভেনিউ সড়ক ও আশপাশের এলাকায় মূহুর্তে-মূহুর্তে তীব্র যানজটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে অক্সিজেন এলাকাবাসীসহ স্থানিয় ব্যবসায়ি ও যানবাহন চালক-যাত্রীরা। অবৈধ যান চলাচল, অবৈধ পাকিং, যানজট, ফুটপাত দখলসহ নানা বিশৃঙ্খলার কারণে যানজটের অভিশাপ থেকে বেরুতে পারছেনা অক্সিজেনবাসী।
গতকাল সরেজমিনে অক্সিজেন মোড় ও আশপাশের এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অক্সিজেন কাঁচা বাজার মোড় থেকে বঙ্গবন্ধু এভেনিউ সড়কে নগরীতে চলাচল নিষিদ্ধ প্রায় দুই শতাধিক গ্রাম সিরিয়ালের সিএনজি ট্যাক্সি চলছে প্রকাশ্যে বিনা বাধায়। এছাড়া আশপাশের অলি-গলিতে আরো দুই শতাধিক ব্যাটারি চালিত রিক্সা চলাচল করছে বলে অভিযোগ করেছেন, স্থানিয় বাসিন্দারা। অক্সিজেন কাঁচা বাজার মোড় থেকে শীতল ঝর্না আবাসিক এলাকা ও মাঝখানে কিছু পথ বাদ দিয়ে এয়ার আলী হাট (নয়ারহাট) পর্যন্ত সড়কে বসানো হয়েছে কাঁচা বাজার ও সবজির দোকান।
একইসাথে ভাসমান হকার রয়েছে আরো প্রায় পাঁচ শতাধিক। অভিযোগ রয়েছে, এসব দোকান ও ভাসমান হকারদের কাছ থেকে দৈনিক ভিত্তিক চাঁদাও আদায় করছে একটি মহল। ফলে ব্যস্ততম এ সড়কটিতে সকাল থেকে রাত অবধি মুহুর্তে-মুহুর্তে তীব্র যানজট লেগেই থাকে। যানজটের কবলে আটকা পড়ে গাড়িতে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা বিরক্তিকর সময় কাটাতে হচ্ছে অফিস, আদালত, স্কুল-কলেজগামী যাত্রীদের। এতে করে মানুষের ভোগান্তি দিনদিন বেড়েই চলছে।
কমে যাচ্ছে কাজের সময়ও। উপরন্তু নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে যত্রতত্র গ্রাম সিরিয়ালের সিএনজি ট্যাক্সি ও ব্যাটারি রিক্সা পাকিং, মাঝ রাস্তায় যাত্রী উঠানামা করানোসহ নানা অনিয়মই এখানকার যানজটের মূল কারণ। অন্যদিকে অক্সিজেন মোড়ের দুই পাশের সড়কে অথ্যাৎ অক্সিজেন-মুরাদপুরমূখী ও অক্সিজেন-ষোলশহর ২নং গেইটমূখী টিকটিকি টেম্পুর অবৈধ ষ্টেশনে প্রায় ৫০ টিরও অধিক টেম্পু দাঁড়িয়ে যাত্রী হাঁকতে দেখা গেছে। এছাড়া অক্সিজেন কাঁচা বাজার মোড় থেকে কুয়াইশ সংযোগ সড়কে চলাচলরত গ্রাম সিরিয়ালের সিএনজি ট্যাক্সি চালকগুলো এ সড়কটি যেন তাদের বাপ-দাদার কেনা সম্পত্তি এমন ভাব প্রর্দশন করে কাঁচা বাজার মোড় থেকে দীর্ঘ আধা কিলোমিটার সড়কের উপর লম্বা সাড়িতে গাড়ি দাঁড় করিয়ে যাত্রী হাঁকছে তারা। অপরদিকে কাঁচা বাজার থেকে শহীদ নগর সড়কে চলাচল করছে আরো শতাধিক চলাচল নিষিদ্ধ অবৈধ ব্যাটারি চালিত রিক্সা। এসব রিক্সাগুলো কাঁচাবাজার মোড়ে ও অক্সিজেন লোহার পুল এলাকায় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে। এসব কারণে পূরো অক্সিজেন এলাকায় যানজট-বিশৃঙ্খলা লেগেই থাকে। আশপাশের গার্মেন্টস ছুটি হলে, পোশাক কারখানার মহিলা শ্রমিকরা এসব পথ ধরে চলতে গিয়ে নানা ভোগান্তিতে পরে।
অভিযোগ রয়েছে, এসব গ্রাম সিরিয়ালের সিএনজি ট্যাক্সি ও ব্যাটারি চালিত রিক্সা চলাচলকে ঘিরে স্থানিয় একটি সিন্ডিকেট লাখ-লাখ টাকার চাঁদাবাজি করছে। ফলে ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করার সাহস পায়না। জানতে চাওয়া হলে, অক্সিজেন পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ ও বায়েজিদ বোস্তামী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শাহ-আলম ফুটপাত তুলে দিবে বলে জানিয়ে তাৎক্ষনিক কিছু সড়কের ভাসমান ফুটপাত সরিয়ে দিলেও পরক্ষণেই আবার বসে যায়। অক্সিজেন এলাকার ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) আমির ফারুক জানান, ভাই অক্সিজেন এলাকায় আমি মাত্র যোগদান করেছি। অক্সিজেন মোড়ে উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে, এ কারণে একটু যানজট হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি যানজটসহ অন্যান্য সমস্যা-সমাধানে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাবেন বলে মন্তব্য করেন।