রাঙ্গুনিয়ায় আমন ধানের বাম্পার ফলনে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। ফসল ঘরে তুলতে শুরু হয়েছে ধান কাটার আয়োজন। ধানকাটা মৌসুমে প্রতিদিনই এ সব বাজারে শ্রম বিক্রির জন্য একটু বেশি ভিড় করে শ্রমজীবী মানুষরা। পণ্যের মতো বিক্রি হয় তাদের শ্রম। প্রয়োজন পড়ছে বাড়তি ধান কাটা শ্রমিকের। তবে মৌসুমের শুরুতেই মহামারি করোনায় লকডাউন না থাকায় দেশের অন্যান্য জেলা থেকে পর্যাপ্ত শ্রমিকরা এসেছে। আর এই শ্রমিক সংকটে না থাকায় তার পরেও কৃষকেরা চড়া মজুরিতেও পাচ্ছেন না প্রয়োজনীয় শ্রমিক। ঠিক সময়ে শ্রমিক না পেলে ফসল ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
রাঙ্গুনিয়ার বিভিন্ন বাজার রোয়াজারহাট, গোচরা,শান্তিরহাট, রানিরহাটে, পদুয়া, রাজারহাট সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে পর্যাপ্ত পরিমাণ শ্রমিক থাকলেও ধান কাটা শ্রমিকের মজুরি চড়া দামে দাবি করছেন শ্রমিকরা।ধান কাটা শ্রমিকের জন্য আসা লালানগর থেকে খলিল ভান্ডারী বলেন-ধান কাটা শ্রমিকের দৈনিক মজুরি ৬৫০ টাকা দাবি করছেন। দৈনিক মজুরির পাশাপাশি তিনবেলা খাওয়ার ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ দিতে হয়। সবকিছু মিলিয়ে একজন শ্রমিকের পেছনে দৈনিক ৯০০ টাকার উপরে খরচ হয়। দৈনিক মজুরিতে ৯০০ টাকায় শ্রমিক এনে এই ধানের দাম পাওয়া যাবে সর্বোচ্চ ১২শ' টাকা। তাহলে কৃষকের লাভ কি, প্রশ্ন রাখেন তিনি। বাজারে ধানের দাম কম থাকায় ধানের দামের চেয়ে খরচ'র দাম দ্বিগুণ।
ধান কাটার শ্রমিক বাঁশখালী থেকে আসা মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ থেকে চড়া দামের শ্রমিক এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন--একজন মানুষ ৫০০ টাকা দিয়ে কিভাবে চলবে। বাড়ি ভাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমরা আরও বেশী বিপাকে করেছি।যে পরিমান মজুরি পায় আমাদের দৈনন্দিন কাজের সাথে কোনভাবেই মিলেনা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে--এবার রাঙ্গুনিয়ায় আমন চাষবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৫ হাজার ২৫৬ হেক্টর। কিন্তু সেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১৫ হাজার ৩২২ হেক্টর হয়েছে। এর মধ্যে রাঙ্গুনিয়ার শস্যভান্ডার খ্যাত গুমাই বিলে চাষাবাদ হয়েছে ৩ হাজার ৪৩৬ হেক্টর। উফশী ধানের চাষাবাদ হয়েছে উপজেলায় ১৫ হাজার ১০ হেক্টর। হাইব্রিড ৯০ হেক্টর স্থানীয় জাত ২২৫ হেক্টর। সবকিছু মিলিয়ে চাউলে ৩.৭৬ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে।