পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাজধানীর হোসনি দালান থেকে শুরু হয়েছে তাজিয়া মিছিল। শনিবার (২৯ জুলাই) সকাল ১০টায় রাজধানীর হোসনি দালান থেকে শুরু হয়ে বেলা ১১টার দিকে পুরান ঢাকার উর্দু রোড অতিক্রম করে মিছিলটি।
মুখে মার্সিয়া (শোকের স্লোগান) গায়ে কালো পাঞ্জাবি, কালো ব্যাজ ধারণ ও খালি পায়ে মিছিলে অংশগ্রহণ করেন শিয়া মুসলমানরা। ঢাকাসহ এর আশপাশ থেকে অনেকে মিছিলে অংশ নেন।
মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা জানান, ইমাম হাসান রক্ত দিয়ে যে শান্তির বাণী প্রতিষ্ঠা করে গেছেন; সে বাণী সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়াই তাদের মূল উদ্দেশ্য।
তাজিয়া মিছিল উপলক্ষে রাজধানীজুড়ে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাজিয়া মিছিল নিয়ে যেকোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এদিকে তাজিয়া মিছিল নিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আশুরা উপলক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে তাজিয়া মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। এ তাজিয়া মিছিলে পাইক দলের ব্যক্তিরা দা, ছোরা, কাচি, বর্শা, বল্লভ, তরবারি ইত্যাদি নিয়ে অংশগ্রহণ করে। ফলে ক্ষেত্রবিশেষে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
যা ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ও নগরবাসীর মনে আতঙ্ক সৃষ্টিসহ জননিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। তাছাড়া মহররম মাসে পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আতশবাজি ও পটকা ফাটানো হয়; যা ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
তাই ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তাজিয়া মিছিলে দা, ছোরা, কাচি, বর্শা, বল্লভ, তরবারি ইত্যাদি বহন এবং আতশবাজি ও পটকা ফাটানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকার হোসেনি দালানে পবিত্র আশুরার তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় বোমা হামলা চালানো হয়। জেএমবির চালানো বোমা হামলায় দু’জন নিহত ও শতাধিক আহত হন। পরবর্তীতে তাজিয়া মিছিলে গ্রেনেড হামলার প্রধান পরিকল্পনাকারী শাহাদাৎ ওরফে আলবানি ওরফে মাহফুজ ওরফে হোজ্জা ২০১৫ সালের ২৫ নভেম্বর রাজধানীর গাবতলীতে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। পরের বছর ২০১৬ সালের ১৩ জানুয়ারি রাজধানীর হাজারীবাগে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন অপর দুই জেএমবি কমান্ডার আবদুল বাকি ওরফে আলাউদ্দিন ওরফে নোমান ও সাঈদ ওরফে হিরণ ওরফে কামাল।