ঢাকা, শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

নতুন বাজেটে ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি আয় করতে হবে এনবিআরকে

নিজস্ব প্রতিবেদক: | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ১০ মে ২০২২ ১২:৫১:০০ পূর্বাহ্ন | অর্থনীতি ও বাণিজ্য

 

 

আগামী ২০২২–২৩ অর্থবছরের বাজেট তৈরির কাজ চলছে। আগামী ৯ জুন এটি জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হবে। নতুন এই বাজেট বাস্তবায়নে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) বিশাল রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হচ্ছে।

 

প্রস্তাবিত বাজেটে আগামী অর্থবছরের মোট আয়ের তিন লাখ ৭০ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হচ্ছে এনবিআরকে। এটি জিডিপির প্রায় ৮.৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছর এনবিআরকে তিন লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া আছে। সেই হিসাবে চলতি ২০২১–২২ অর্থবছরের বাজেটের মূল লক্ষ্য থেকে প্রায় ১০ শতাংশ বা ৪০ হাজার কোটি টাকা বেশি।

 

 

এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী আগামী অর্থবছরে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে হবে ভ্যাট বিভাগকে। এছাড়া আয়কর বিভাগকে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ও শুল্ক বিভাগকে ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা আদায় করতে হবে। এ ছাড়া আগামী বাজেটে মোট আয়ের মধ্যে নন-এনবিআর থেকে প্রাক্কলন করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা। কর-বহির্ভূত রাজস্ব ৪৯ হাজার কোটি টাকা ধরা হয়েছে।

 

 

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্পদ কমিটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) জন্য রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করে।

 

প্রসঙ্গত,  করোনা সংকট কাটিয়ে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য আগের জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করছে।  আন্তর্জাতিক বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। এর ওপর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধও নতুন শঙ্কা তৈরি হয়েছে। মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) এই বিশাল টার্গেট দেওয়া হচ্ছে।

 

এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মজিদ মনে করেন অর্থনীতির এই পরিস্থিতিতে এত বেশি শুল্ক-কর আদায়ে এনবিআরের সক্ষমতা নেই। তিনি বলেন, বাজেটের অঙ্ক মেলানোর জন্য এনবিআরকে এই বিশাল লক্ষ্য দেওয়া হচ্ছে। মূলত ব্যয় বাজেটের সঙ্গে সংগতি রাখতেই এটি করা হচ্ছে, যার সঙ্গে বাস্তবতার কোনও মিল নেই।

 

এনবিআরের তথ্য বলছে, গত অর্থবছরের মতো চলতি অর্থবছরেও শুল্ক-কর আদায়ের লক্ষ্য অর্জিত হচ্ছে না। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে পৌনে দুই লাখ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে।

 

করমুক্ত আয়সীমা বাড়ছে:

 

বর্তমানে একজন করদাতার বছরে করযোগ্য আয় তিন লাখ টাকার বেশি। এর কম হলে তাকে কর দিতে হয় না। নতুন অর্থবছরে করদাতাদের করযোগ্য আয় নির্ধারণ করা হচ্ছে সাড়ে তিন লাখ টাকা। অর্থাৎ আগামী অর্থবছরে এ সীমা আরও ৫০ হাজার টাকা বাড়িয়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা করা হতে পারে।

 

করোনার কারণে অনেক করদাতার আয় কমে গেছে। আবার এই সময়ে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সংসারের খরচ বেড়েছে। এ রকম অবস্থায় নতুন অর্থবছরের বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে।  অবশ্য করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ালে বিপুল সংখ্যক করদাতা করজাল থেকে বেরিয়ে যাবেন, আর যারা করজালে থাকবেন, তাদের করের পরিমাণ কমবে। এ কারণে বর্তমান প্রান্তিক করদাতাদের করজালে ধরে রাখতে বিকল্প চিন্তাও করছেন কর কর্মকর্তারা। বিকল্প হলো, বর্তমান করমুক্ত আয়সীমার প্রথম এক লাখ টাকা পর্যন্ত ৫ শতাংশ হারে কর আরোপ করা হয়। এ সীমা বাড়িয়ে দুই লাখ টাকা কিংবা আরও বেশি করা হতে পারে। ফলে করের পরিমাণ কিছুটা কমলেও করজালে করদাতার সংখ্যা কমবে না। এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী বর্তমানে ৭৫ লাখের বেশি কর শনাক্তকরণ নম্বরধারী (টিআইএন) রয়েছেন।