ঢাকা, শুক্রবার ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বাঁশখালীতে পৌরসভার ময়লা বর্জ্যে পুরো এলাকা সয়লাব, ব্যাপক ক্ষতি

শফকত হোসাইন চাটগামী, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ২২ অগাস্ট ২০২৪ ০৮:০৯:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন
বাঁশখালীতে পৌরসভার ময়লা বর্জ্যে সয়লাব পুরো এলাকা, ফসলের ব্যাপক ক্ষতি।

বাঁশখালীতে ময়লার ডিপুর ময়লা বর্জ্যে পুরো এলাকা তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বর্জ্য, পলিথিন, শক্ত কঠিন পদার্থ, মেডিকেল বর্জ্য কৃষি জমির জন্য ক্ষতির কারণ হবে বলে জানিয়েছে কৃষি কাজে সংশ্লিষ্টরা। কোন সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা না করে সড়ক ও পাহাড়ের ঢালুতে অপরিকল্পিত ময়লার ডিপু তৈরি করায় ভারি বর্ষণে ওই ময়লা এখন পুরো এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সয়লাব হয়ে গেছে। এতে এলাকার ফসল, পুকুর, গাছপালাসহ কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে এলাকায়। এই পরিনতির জন্য স্থানীয় লোকজন মেয়র তোফাইল বিন হোছাইনকে দায়ী করেছেন।

জানা গেছে, বাঁশখালী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড দিঘীরপাড় সংলগ্ন কালুকাটা এলাকায় অপসারিত মেয়র তোফাইল বিন হোছাইনের জুলুম অত্যাচারের শিকার হয়েছে এলাকাবাসী। ক্ষমতায় বসেই ২ বছর আগে এই এলাকায় জোরপূর্বক ময়লার ডিপু সৃষ্টি করে মেয়র। এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলে তাদের হামলা মামলা দিয়ে নির্যাতন করা হয়। এই কাজে সহযোগীতা করেন ৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আকতার হোসাইন।

তোফাইল বাঁশখালী পৌরসভার পলাতক মেয়র। গত পরশু তাকে অপসারণ করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়। স্থানীয়দের দাবী, এখন যেন ওই ময়লার ডিপু এই এলাকা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়।

সরেজমিনে দেখা গেছে, গতকাল ভারি বর্ষণে ওই ময়লাগুলো এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যায়। ময়লাগুলো এখানে ফেলার আগে কোন সুরক্ষা ব্যবস্থা করা হয়নি। ময়লার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত পুরো একটি এলাকা। মসজিদ, পুকুর, ঘরবাড়ি ফসল এমনকি বন বিভাগে নার্সারী, পরিবেশ গাছপালা জীব বৈচিত্র্য সবকিছুই আজ ধ্বংসের মুখে। ময়লা বর্জ্যের সাথে হাসপাতালে ব্যবহার করা ইনজেকশন সুই ও বি়ভিন্ন কাচের ভাঙা অংশ এখন বিপদ জনক হয়ে উঠেছে। পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড দিঘীরপাড় সংলগ্ন এলাকা এখন পরিনত হয়েছে বিরানভূমিতে। কয়েকশত একর জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।

স্থানীয় কৃষক আজিজ আহমদ, মফজল আহমদ, আকতার হোসেন, আবদুর রহিম, মুহিব্বুল্লাহ ও মনির আহমদ জানান, জোরপূর্বক এই এলাকায় মেয়র তোফাইল অপরিকল্পিতভাবে ময়লার ডিপু করায় আজ সেখানে ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাছাড়া সারা বছর ময়লার দুর্গন্ধে এখানে বসবাস করাও মুশকিল হয়ে পড়েছে। মশার উপদ্রব এবং রোগবালাই তো লেগেই আছে। তারা জানান, বৃষ্টিতে ওই ডিপুর ময়লা পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। মসজিদের পুকুর, ক্ষেত ফসল বন বিভাগের নার্সারী সব নষ্ট হয়ে গেছে।

এলাকাবাসী অবিলম্বে উক্ত এলাকা থেকে ময়লার ডিপু অপসারণের দাবী জানানোর পাশাপাশি তাদের ক্ষতিপূরণ দেয়ার দাবি জানিয়েছে।

৬নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আকতার হোসাইন জানান, ময়লার ডিপুর পাশে বাঁধ নির্মাণের কথা ছিল, বরাদ্দ না হওয়ায় এখনো কাজ শুরু করা যায়নি।

বাঁশখালী উপজেলা কৃষি অফিসার আবু ছালেক জানান, বর্জ্য কৃষি জমিতে পড়লে সেটা দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বিশেষ করে পলিথিন, শক্ত কঠিন পদার্থ, মেডিকেল বর্জ্য কৃষি জমির জন্য ক্ষতির কারণ হবে। বিষয়টি নিয়ে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলব।

বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেসমিন আক্তার জানান, এই বিষয়ে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে খোঁজ খবর নিয়ে পদক্ষেপ নেয়া হবে।