ঢাকা, সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

রায়সাহেব বাজার মোড়ে শেষ হলো বিএনপির পদযাত্রা

নিজস্ব প্রতিবেদক: | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ১৮ জুলাই ২০২৩ ০৮:২৪:০০ অপরাহ্ন | রাজনীতি

পুরান ঢাকার রায়সাহেব বাজার মোড়ে শেষ হয়েছে বিএনপির পদযাত্রা। মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে গাবতলী থেকে বিএনপির এই পদযাত্রা শুরু হয়। মিছিলে মিছিলে এই পদযাত্রায় নেতাকর্মীদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। দীর্ঘ ১৬ কিলোমিটারের এই পদযাত্রা রাজধানীর টেকনিক্যাল মোড়, মিরপুর-১, মিরপুর-১০ গোল চত্বর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁওয়ের তালতলা, বিজয় সরণি, কাওরান বাজার, এফডিসি গেট, মগবাজার, কাকরাইল, নয়াপল্টন, ফকিরাপুল, মতিঝিল, ইত্তেফাক মোড়, দয়াগঞ্জ হয়ে রায়সাহেব বাজার মোড়ে গিয়ে সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শেষ হয়।

 

এ সময় সরকারকে হুঁশিয়ারি জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমার এই রাজনৈতিক জীবনে খালেদা জিয়ার জন্য আমি বহু মিছিল করেছি। কিন্তু আজকে যে মিছিল, সেই অভিজ্ঞতা আমার আগে ছিল না। আজকে এত বড় মিছিল হয়েছে যে তা পুরো বিশ্বকে অবাক করে দিয়েছে। আজকে আওয়ামী লীগ শোভাযাত্রা করছে। কার জন্য কী জন্য করেছে, এটা তারা ভালো জানে। তারা শোভাযাত্রা করেছে—আবার দেশটাকে লুটেপুটে খেতে। আজকে বাঙলা কলেজের সামনে যেভাবে দৌড়ানি খাইছে, তাদের শিক্ষা হয়েছে। যারা এটা করেছেন তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই।’

 

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমি শেখ হাসিনাকে বলতে চাই, কয়দিন পর আপনারা পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না। এখনও সময় আছে, ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে জনগণের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।’

 

 

তিনি বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার যে নির্বাচন (ঢাকা-১৭ আসনে উপনির্বাচন) হয়েছে, তাতে একজন মোটে ১০ থেকে ১২ পার্সেন্ট ভোট পেয়ে মহাখুশি। তার মানে বুঝা গেলো বাকি ৯০ পার্সেন্ট বিএনপির জনগণ।’ এ সময় তিনি ভোট প্রসঙ্গে বলেন, ‘ভোট নিয়ে কিছু বলার নেই। আওয়ামী লীগ সরকারই তো ভুয়া, ভোট তো ভুয়া হবেই।’ এছাড়া আগামীকালের বুধবার (১৯ জুলাই) পদযাত্রা যেন সফল হয়, সেজন্য নেতাকর্মীদের দিকনির্দেশনা দেন তিনি।

 

এ সময় বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা। ঢাকা মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘খুনি হাসিনার পতনের এক দফা দাবিতে আজ বিএনপির উদ্যোগে গাবতলী থেকে রায়সাহেব বাজার মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা হয়েছে। আজকে পুরান ঢাকা থেকেই খুনি হাসিনার পতনের আন্দোলন শুরু হবে।’

 

ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, ‘এ দেশ কারও বাপ-দাদার সম্পত্তি নয়। পুরান ঢাকার বিএনপির ভয়েই সরকার ভয়ে থাকে। সারা দেশে বিএনপি মাঠে নামছে। সরকারের পদত্যাগ নিশ্চিত।’

 

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন আইসিইউতে ভর্তি হয়েছে। হাসিনার অধীনে বাংলাদেশে আর কোনও নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। শেখ হাসিনাকে আমি বলবো, সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন, ইনশাআল্লাহ।’

 

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার ভোট চোর। তার অধীনে নির্বাচন নয়। এই পুরান ঢাকার মানুষ ডেঙ্গু মশার অত্যাচারে অতিষ্ঠ। আওয়ামী লীগের মেয়র কোথায়? পরিবার নিয়ে বিদেশে ঘুরছেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রীও বিদেশে পালিয়েছেন। এই আন্দোলন খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের আন্দোলন নয়। মানুষের বেঁচে থাকার আন্দোলন। আমি আজকে এই পুরান ঢাকাবাসীকে মনে করিয়ে দিতে চাই—এই পুরান ঢাকায় শেখ হাসিনা বিএনপির সঙ্গে হেরেছে। আজকে ব্যবসার অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। অথচ ব্যাংক চোর, শেয়ার বাজার লুটকারী ৫০ জন, তারা বলছে—তারা নাকি হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় চান। বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, তারপর তারেক রহমান। আগামীকালও আমরা বিশাল পদযাত্রা করবো।’

 

যুবদলের সভাপতি বিএনপির সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ‘বিএনপি মরতে জানে। তা বহুবার প্রমাণ হয়েছে, আওয়ামী লীগকে ছাড় দেবে না। বিএনপি জেগেছে। আওয়ামী লীগের পদত্যাগ ছাড়া বিএনপি পিছু হটবে না।’

 

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘এক নিরীহ হিরো আলমকে সরকার ভয় পেয়েছে। তাকে মারধর করা হয়েছে। তাহলে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে দেশজুড়ে কী অবস্থা হবে। এ জন্য ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ। কিন্তু বিএনপি তা হতে দেবে না। আমাদের একদফা সফল হবেই, ইনশাআল্লাহ।’