চট্টগ্রামের গণপুর্ত রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ থেকে বিগত ১/১/২০১১ সালে অবসর নেয়ার পরও এখনো বহাল তবিয়তে গণপূর্তে কাজ করছেন আব্দুস সালাম নামের এক কর্মকর্তা। জানা যায়, তিনি গণপূর্ত হিসাব রক্ষণাবেক্ষন বিভাগের উচ্চমান হিসাব সহকারী পদে কর্মরত ছিলেন। ২০১১ সালে তিনি তার পদের চাকুরী থেকে অবসর গ্রহন করেন। অবসর নিলেও গণপূর্তে চাকুরী ও এলটেড বাসা নিয়ে আজো বহাল তবিয়তে আছেন তিনি। সেইসাথে প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ন কাজের দায়িত্ব এখনো তার হাতেই ন্যাস্ত।
জানা যায়, গণপূর্তের অনেক বাড়ি পরিত্যাক্ত হয়ে আছে। অনেক বাড়ি অন্যর দখলে চলে গেছে । আবার অনেক জায়গাও বেহাত হয়ে আছে। লোকবলের অভাবে এ বিষয়ে সঠিক তদারকি করতে পারছেনা গণপূর্তের হিসাব রক্ষনাবেক্ষণ বিভাগ। তারা বলছে জনবল শুন্য হওয়ায় অনেক সময় সঠিকভাবে আইনের কাজগুলো করতে পারছেনা তারা। যার ফলে অবসর প্রাপ্ত কর্মি ও গার্ডদিয়ে কাজ করাতে হয়। যেমন গার্ডকে দিয়ে কম্পিউটার অপারেটরের কাজ করাচ্ছেন নির্বাহী প্রকোশলী। আরো জানা যায়., অবসর গ্রহনের পরও অফিসিয়াল কাজসহ মামলা মোকাদ্দমার কাজ করে যাচ্ছেন আব্দুস সালাম। শুধু তাই নয়, গণপূর্তের ঘরভাড়া নেয়া থেকে শুরু করে ঘরের এলটমেন্ট দেয়ার জন্য এখনো সরকারী ফাইলে সই করেন তিনি। সেইসাথে তদবীর করে পছন্দের লোককে বাড়ি এলট পাইয়ে দেন বলেও জানা যায়। আইনের মারপ্যাচ বুঝেন, তাই অবসরে গেলেও তাকে দিয়ে আইনের সকল কাজ করান নির্বাহী প্রকৌশলী মাইনুল ইসলাম। বৃদ্ধ হলেও গণপূর্তের রক্ষণাবেক্ষনের মামলাগুলোতে কোর্টের বিষয়গুলো দেখেন তিনি। সেইজন্য সপ্তাহের বেশীর সময় কোর্টেই কাটাতে হয় তাকে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা সুত্রে জানা যায়, যে ফাইলে মাইনুল ইসলাম সই করেন, সেই সরকারী ফাইলে অবসর প্রাপ্ত হলেও আব্দুস সালাম সই করেন। যা সম্পূর্ন বিধি বর্হিভুত। শুধু তাই নয় তাকে দিয়ে ভাড়া উত্তোলন ও রক্ষণাবেক্ষন, মামলার কাজ করান। যার ফলে আব্দুস সালাম সে সুযোগ ব্যবহার করে বিভিন্ন বাসার ভাড়া উত্তোলনও করেন। তার নিজের ইচ্ছেমতো এই বিভাগের সকল কাজে হস্তক্ষেপ করেন। নির্বাহী প্রকৌশলীর আর্শিবাদ পুষ্ট বিধায় এখানে কেউ কিছু বলতে পারেন না। অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, আব্দুস সালাম বর্তমানে যে বাসায় বসবাস করেন বিগত ০৪/০৯/১৯৮৩ সালে ডিমান্ড নোট বলে সেটি এলটমেন্ট প্রাপ্ত হন তিনি। ২০১১ সালে আব্দুস সালাম সরকারী বিধি মোতাবেক অবসরে গেলেও গনপূর্ত বিভাগ থেকে প্রদত্ত সরকারী এলটেড ভবন এখনো রয়ে গেছে সালাম সাাহেবের দখলে। তিনি এখনো সেই বাসায় বসবাস করেন। এ বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী মাইনুল ্ইসলাম বলেন, তার দখলে থাকা বসবাসকৃত বাসা নিয়ে তার বিরুদ্ধে একটি উচ্ছেদ মামলা করা হয়েছে। এই মামলাটি আলাদা ভাবে এডভোকেট শিখা চক্রবর্তী দেখছেন। আর বাকী ১৭৯টি মামলা লোকবল শুন্য হওয়ায় আব্দুস সালাম দেখাশুনা করেন। এসব মামলার কোর্টের কাজগুলো সমাধান করেন। তার মধ্য আব্দুস সালামের উচ্ছেদ মামলা নম্বরটি কত? এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি নম্বরটির ব্যাপারে কোন সদত্তোর দিতে পারেননি।
নির্বাহী পরিচালক মাইনুল ইসলাম আরো বলেন, তিনি অবসর হলেও অফিসের হয়ে কাজ করছেন। যেহেতু আইন বিভাগে জনবল শুন্য রয়েছে। তাই মুলত তাকে দিয়ে অফিসের কাজ করানো। বিষয়টি আমাদের সচিব মহোদয়, বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসি সাহেব অবগত আছেন। তার দুর্নীতির বিষয় কিছু জানলে আমাকে জানান আমি আইনগত ব্যবস্থা নিবো। যে অবসর প্রাপ্ত সে কোন অন্যায় করলে তার বিরুদ্ধে কিভাবে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন এই প্রশ্নে তিনি বলেন, তার পেনশন আমাদের হাতে । আমাদের সই স্বাক্ষরে তিনি মাসে মাসে তা পান। তার মাধ্যমে কোন দুর্নীতি হলে আমি তার সুযোগ সুবিধা ও পেনশনের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবো। নির্বাহী প্রকোশলী আরো বলেন, তিনি যেহেতু মামলা মোকাদ্দমা করেন, সেহেতু তার প্রতিপক্ষ অনেক থাকবে। এরই মধ্যে আমরা বাড়ি উচ্ছেদ করছি ৪টা। যেহেতু এখানে তার সহযোগীতা রয়েছে সেহেতু তার বিরু্েদ্ধ শত্রু থাকবেই। বিষয়টি আপনাদের পজেটিভ দেখতে হবে।