ঢাকা, সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

আলীকদমে অবৈধ ইটভাটা চলছে মন্ত্রীর ভাই পরিচয়ে

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : সোমবার ২০ মার্চ ২০২৩ ০৬:০৪:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন
 
 
বান্দরবানের আলীকদমে সদর ইউনিয়নের ৩ ওয়ার্ডে মন্ত্রীর ভাই পরিচয়ে গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ এফবিএম ইটের ভাটা। পরিবেশ আইন অমান্য করে ইট পোড়াতে বনাঞ্চল উজাড় করে জ্বালানি কাঠ ব্যবহার, ইট তৈরির জন্য মাটির জোগান দিতে ফসলি জমির টপসয়েল ও পাহাড় কাটা মাটির ব্যবহার এবং শিশুশ্রম শাস্তিযোগ্য অপরাধ হলেও ইটের ভাটায় শ্রমিকের পরিবর্তে শিশুদের দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে।
 
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন,এফবিএম ইটের ভাটার মালিক হচ্ছেন চট্টগ্রামের শওকত আলী তালুকদার। তিনি তথ্যমন্ত্রীর নিকট আত্মীয় (ভাই)পরিচয়ে পার্বত্য অঞ্চলের আলীকদম উপজেলায় নিয়মনীতি ও পরিবেশ আইন অমান্য করে বনাঞ্চল এবং জনবসতির অভ্যন্তরে গড়ে তুলেছেন অবৈধ ইটের ভাটাটি। প্রতিদিনই বনাঞ্চল উজাড় করে বিভিন্ন জায়গা থেকে শত শত মণ জ্বালানি কাঠ মজুত, ইটের ভাটায় কয়লার পরিবর্তে কাঠ পোড়াচ্ছে এবং আশপাশের ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি (টপসয়েল) ও পাহাড় কেটে ডাম্পার ট্রাকে করে মাটি আনা হচ্ছে ইটের ভাটায়। ইটের ভাটার কালো ধোঁয়া এবং ধুলো-মাটিতে আশপাশে বসবাসরত মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
 
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ইটের ভাটার বিভিন্ন পাশে হাজার হাজার মণ জ্বালানি কাঠের স্তূপ, বিশাল বিশাল মাটির স্তূপ, দিনের বেলায়ও ট্রাকে ট্রাকে ঢুকছে জ্বালানি কাঠ, ডাম্পার ট্রাকে করে আনা হচ্ছে মাটি। ইট তৈরির কাজ করছে অনেক শিশুও।
 
ইটের ভাটায় কর্মরত এক শিশু জানায়, ছয় মাসের জন্য চুক্তি ভিত্তিক কাজ করতে এসেছি এফবিএম ইটের ভাটায়। ইট তৈরি ও ইট শুকানোর কাজ করি। বর্তমানে দু'মাসের বেশি হচ্ছে এখানে কাজ করছি।
 
এফবিএম ইটের ভাটার মালিক শওকত আলী তালুকদার বলেন, সরকারকে ভ্যাট ট্যাক্স দিচ্ছি। কাগজপত্র ছাড়া ইটের ভাটা করিনি। আমার এক ভাই মন্ত্রী আছে বলে জানান।
 
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আশপাশের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের বত্রিশটি অবৈধ ইটের ভাটা বন্ধের বিরুদ্ধে সময় চেয়ে উচ্চ আদালতের একটি আদেশ ছিল। কিন্তু সম্প্রতি উচ্চ আদালত সেটি বাতিল করে দিয়েছেন। পার্বত্য চট্টগ্রামে কোনো ইটের ভাটার বৈধতা নেই। সবগুলোই অবৈধ এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য হুমকি। এগুলো বন্ধে অভিযানের দাবি জানাচ্ছি।
 
বনবিভাগের আলীকদম তৈন রেঞ্জ অফিসার আবুল কাশেম বলেন, কাঠ পোড়ানো সম্পূর্ণ অবৈধ। বেশ কয়েকবার অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। ইউএনওর সঙ্গে আলোচনা করে প্রশাসন ও বনবিভাগের পক্ষ থেকে যৌথ অভিযান চালানো হবে আরও।
 
আলীকদম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাবের মো.সোয়াইব বলেন, আলীকদমে অনুমোদিত কোনো বৈধ ইটের ভাটা নেই। অবৈধ ইটের ভাটা বন্ধে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে নির্মাণাধীন একটা ইটের ভাটা মামলা করে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বাকি ইটভাটা গুলোর বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে বলে জানান।