কক্সবাজারের উখিয়ায় সুপারি চুরির মিথ্যা অভিযোগে কলেজছাত্র রায়হান শরীফকে রড ও বিদ্যুতের তার দিয়ে পাশবিক নির্যাতনের ঘটনায় মুল অভিযুক্ত ফজল কাদের (৩৮) সহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৫।
আটককৃত অন্যান্যরা হলেন - মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ (২২), আব্দুর রহমান (৩৮), আজিজুল হক (৫২)।
মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে র্যাব-১৫ এর কক্সবাজার কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১৫ এর উপ অধিনায়ক মেজর সৈয়দ সাদিকুল হক।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান," মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে কক্সবাজার সদর উপজেলার কলাতলী মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন এলাকা থেকে আত্নগোপনে থাকা ফজল কাদের সহ অন্যান্য আসামীদের আটক করে র্যাব এর একটি আভিযানিক দল।"
র্যাব এর উপ অধিনায়ক বলেন, "প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফজল কাদের সুপারি চুরির মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে কলেজ ছাত্র রায়হান শরীফ (১৯) কে নির্যাতনের ঘটনা স্বীকার করেছেন। পূর্ব শত্রুতার জেরে নিজের বাড়িতে রায়হানকে প্রায় দুই ঘন্টা ধরে নির্যাতন চালিয়ে রক্তাক্ত করে ফজল কাদের সহ তার অন্যান্য সহযোগীরা।"
আটককৃত'দের উখিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এবং এঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের আইনের আওতায় আনতে র্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে বলে তিনি জানান।
র্যাব জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃত ফজল কাদের একজন তালিকাভুক্ত মাদক ব্যবসায়ী।
গত শনিবার (২৫ মার্চ) রাতে উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড এর মোহাম্মদ আমিনের পুত্র কলেজ ছাত্র রায়হান কে চুরির অপবাদে নিজেদের বাড়িতে তুলে নিয়ে নির্যাতন চালায় ফজল কাদের ও তার সহযোগীরা।
পরদিন রবিবার (২৬ মার্চ) রাত ১০ টার দিকে এ ঘটনায় ফজল কাদের'কে প্রধান আসামী করে ৪ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় রায়হানের পিতা মোহাম্মদ আমিন মামলা (নং -৫৬/২০২৩) দায়ের করেন।
প্রসঙ্গত, ফজল জালিয়াপালং ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক আহবায়ক। ২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলে ফজল কাদের কে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিস্কার সহ জালিয়াপালং ইউনিয়নের কমিটি বাতিল করে কক্সবাজার জেলা যুবলীগ।
একই বছরের সেপ্টেম্বরে র্যাবের হাতে ইয়াবা আটকের ঘটনায় রামু থানায় দায়ের করা মামলা'র (নং- ০২/৩২১) চার্জশিট থেকে ইয়াবা কারবারি ফজল কাদেরের নাম কৌশলে বাদ দেওয়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
এদিকে মূল আসামী আইনের আওতায় আনায় র্যাব ও গণমাধ্যমকর্মীদের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন রায়হানের পিতা মোহাম্মদ আমিন। তবে জামিনে মুক্তি পেলে আসামীরা আবার তার পরিবারের উপর ছড়াও হতে পারে এমন আশংকায় নিরাপত্তা চেয়েছেন তিনি।