প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস সোমবার বাংলাদেশের কর্মকর্তা, এনজিও এবং সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দকে বাকুতে কপ ২৯ সম্মেলনে দেশের জলবায়ু সংকটের উদ্বেগ তুলে ধরতে অতিরিক্ত প্রচেষ্টা চালাতে বলেছেন। জাতিসংঘের বার্ষিক জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিতে আজারবাইজানের রাজধানীতে পৌঁছার পরপরই বাকুতে তিনি এ আহ্বান জানান।
তিনি বাকুর একটি হোটেলে সমন্বয় সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলকে বলেন, ‘আমাদের প্রধান প্রচেষ্টা হবে আমাদের উদ্বেগ ও দাবিগুলি কপ২৯-এর চূড়ান্ত ঘোষণায় অন্তর্ভুক্ত করা’ ।
বৈঠকে পরিবেশ সচিব ফারহিনা আহমেদ সম্মেলনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান সম্পর্কে কর্মকর্তাদের অবহিত করেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ শীর্ষ সম্মেলনে জলবায়ু অর্থায়ন, ক্ষতি ও প্রশমন এবং শুধু রূপান্তর ও অভিযোজন প্রক্রিয়াসহ সকল প্রধান ক্ষেত্রে আলোচনার জন্য নয়টি দল গঠন করেছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্তত ২৯টি এনজিও এবং সুশীল সমাজ গোষ্ঠী কপ২৯-এ যোগ দিচ্ছে।
তিনি বলেন, গ্লোবাল নর্থের ধনী দেশগুলোর আশ্বাস সত্ত্বেও বাংলাদেশ এ পর্যন্ত ৩৪৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান এবং ২৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ জলবায়ু অর্থায়ন হিসেবে পেয়েছে।
এর আগে বিকেল ৫.১৫ মিনিটে স্থানীয় সময় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বাকু পৌঁছান। তিনি মঙ্গলবার কপ ২৯-এর মূল শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন এবং অন্তত তিনটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, প্রধান উপদেষ্টা ১১ থেকে ১৪ নভেম্বরের এই রাষ্ট্রীয় সফরে রাজধানী বাকুতে প্রধান উপদেষ্টা অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করবেন। জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম বাংলাদেশ বাকুতে নিজেদের দাবি-দাওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ যে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে-সেসব বিষয় তিনি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরবেন।
শফিকুল আলম আরো বলেন, অধ্যাপক ইউনূস কপ-২৯ জলবায়ু সম্মেলনের বিভিন্ন ফোরামে বক্তব্য রাখবেন এবং সেখানে অংশগ্রহণকারী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে তার বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বাংলাদেশ যে বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে, সেটিও তুলে ধরা হবে এই সম্মেলনে।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট বেলা ১১টায় হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ছেড়ে যায়। বিমানে যাত্রীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নেয়ার পর এটি ড. ইউনূসের দ্বিতীয় সফর। তার প্রথম সফর ছিল নিউইয়র্কে জাতিসংঘের ৭৯তম সাধারণ অধিবেশন উপলক্ষে।