কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সহিংসতা চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে মর্মান্তিকভাবে নিহত হয়েছেন নাসিরনগরের কিশোর হাফেজ মোনায়েল আহমেদ ইমরান।
গত ২১ জুলাই (রবিবার) বিকাল ৩টায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সাহেবপাড়ায় গুলিবিদ্ধ হয়। পরে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করে ময়নাতদন্ত শেষে গ্রামের বাড়িতে তাকে কবর দেয়া হয়।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১৭ বছর। সে জিরুন্ডা মানপুর তোফাইলিয়া ফাজিল মাদরাসায় ৮ম শ্রেণিতে পড়তো। পরে ঢাকার একটি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। ইমরানের পৈতৃক গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার রামপুর গ্রামে। তার বাবার নাম ছোয়াব মিয়া। মায়ের নাম ইয়াছমিন আক্তার। চার ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট ইমরান। তার বাবার ক্ষুদ্র কাপড় ব্যবসার সুবাদে নারায়ণগঞ্জ সিদ্ধিরগঞ্জের সাহেবপাড়ায় বসবাস করে। তার পরিবারের সাথে দেখা করতে নারায়ণগঞ্জ যাই ইমরান। সেখানে সেদিন শিক্ষার্থীদের কোটা আন্দোলন ঘিরে সহিংসতা হয়। বাবা-মায়ের অনুমতি নিয়ে তিন মিনিটের জন্য বেরিয়ে বাসার পাশে এসে দাঁড়ায় ইমরান। মুহূর্তেই একটি গুলি এসে লাগে তার বুকে। মাটিতে লুটিয়ে পড়ে সে। স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে নেয়া হয় ঢাকা মেডিকেলে। সেখানে কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়।
নাসিরনগর উপজেলার রামপুর থেকে নিহত ইমরানের দাদি জানান, কিতা আর কমু! আমার বুকের ধন কাইরা নিছে। নারায়ণগঞ্জ যাওনের আগের দিন আমার গলায় ধইরা একটা চুমা দিয়ে কইছিন, দাদি আমি আবার কিছু দিন পর বাড়িত আইয়া পরুম। তুমি চিন্তা কইরো না। আমার নাতি বাড়িত আইছে ঠিকই। কিন্তু লাশ হইয়া আইছে। এই বিচার আল্লাহ করব।
ইমরানের বাবা ছোয়াব মিয়া বলেন, আমার পুলা হের মায়ের কুলে ঘুমাই আছিন। ইকটু পরে কয় আম্মা আমার খুব তাইস করতাছে। তিন মিনিট সময় দিবানি একটু দোকানে যামু। একটা ঠান্ডা খাইয়া আবার আইসা পড়ুম। কিন্তু এই যাওয়া যে শেষ যাওয়া হইব কেডা জানতো। আমার ছেলে হত্যার বিচার চাই। আমার কোরআনের হাফেজ ছেলেকে যারা হত্যা করছে এর বিচার আল্লার কাছে দিলাম।