ভোর ৫টা থেকে একে একে জড়ো হচ্ছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। সব শিক্ষার্থীর কাছেই বাইসাইকেল। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই সাড়ে ৩০০ ছাত্রছাত্রীর পদচারণায় মুখরিত বিদ্যালয় চত্বর। বর্ষবরণ উপলক্ষে পহেলা বৈশাখে (১৪ এপ্রিল) এ দৃশ্যের অবতারণা হয় নড়াইলের প্রত্যন্ত অঞ্চল গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। করোনার ধাক্কা কাটিয়ে দুই বছর পর ব্যতিক্রমী বর্ষবরণে মেতে উঠেন বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ ১১ গ্রামবাসী। বাইসাইকেল চালিয়ে প্রায় ১৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানান সবাই। জেলা শহর থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দুরে বিদ্যালয়টির অবস্থান হলেও সাংস্কৃতিক ঐহিত্য রয়েছে এখানে।
বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্রী অঙ্কিতা ভৌমিক বলে, এক সপ্তাহের প্রস্তুতি শেষে বাংলা নববর্ষকে বরণ করে নিয়েছি। সবার মুখে ‘শুভ নববর্ষ’ লিখেছি। বিভিন্ন ধরনের প্লাকার্ড, ফেস্টুন বানিয়েছি। খুবই আনন্দিত আমরা। হ্যাপি পাঠক, চৈতী গোস্বামী, অনন্যা সিংহসহ একাধিক শিক্ষার্থীরা জানায়, তারা বাইসাইকেলে ১১টি গ্রাম ঘুরে নববর্ষ উদযাপন করেছে।
অভিভাবকসহ এলাকার বিভিন্ন পেশার মানুষ বলেন, সুষ্ঠু-সুন্দর ভাবে বর্ষবরণ করতে পেরে নড়াইলের গুয়াখোলা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের চোখে-মুখেই অন্যরকম আনন্দ-উচ্ছ্বাস। ব্যতিক্রমী বিষয় হচ্ছে-এ স্কুলের সাড়ে ৩০০ ছাত্রছাত্রী বাইসাইকেল চালিয়ে প্রায় ১৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছে। সুশৃঙ্খল ভাবে পরিচালিত বাইসাইকেল শোভাযাত্রাটি গ্রামগুলো পরিদর্শন করে। এ সময় শিক্ষার্থীদের বাইসাইকেলে বর্ষবরণ সংক্রান্ত বিভিন্ন লেখা শোভাযাত্রার আকর্ষণ আরো বাড়িয়ে দেয়।
এদিকে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ মন্ডল বলেন, পরিবেশবান্ধব বাইসাইকেল চালিয়ে প্রায় সব ছাত্রছাত্রীই নিয়মিত বিদ্যালয়ে যাতায়াত করে। এরই ধারাবাহিকতায় বাইকেলযোগেই এবার নতুন বাংলা বছর বরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে পথচারী, বিভিন্ন যানবাহন চালকসহ সাধারণ যাত্রীরাও সহযোগিতা করেন। ভবিষ্যতেও এ ধরণের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন-বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শিখা রানী মল্লিক, শিক্ষক তাপস পাঠক, কৃষ্ণ গোপাল রায়, সুকান্ত গোস্বামী, শিবানী রানী দাসসহ অন্যরা। #