ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

পানির নিচে অগ্ন্যুৎপাতে ভয়াবহ সুনামি

Author Dainik Bayanno | প্রকাশের সময় : শনিবার ১৫ জানুয়ারী ২০২২ ০৭:৪৭:০০ অপরাহ্ন | আন্তর্জাতিক

পানির নিচের আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশ টোঙ্গায় ভয়াবহ সুনামি আঘাত হেনেছে।

 

সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, একটি গির্জা ও কয়েকটি বাড়ির মধ্য দিয়ে পানি বয়ে যাচ্ছে। আতঙ্কিত লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুটছেন।

 

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, উদগীরিত ছাই এসে রাজধানী নুকু’আলোফায় পড়ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে সুনামি সতর্কতা পাঠানো হয়েছে। সুনামি থেকে বাঁচতে লোকজন উঁচু স্থানে ছুটে গিয়ে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করছেন।-খবর বিবিসির

 

হুঙ্গা টোঙ্গা-হুঙ্গা হাপাই আগ্নেয়গিরির উদগীরণ নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া থেকে শুরু করে পুরো দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শোনা যাচ্ছে।

 

আগ্নেয়গিরি থেকে টোঙ্গোর রাজধানী ৬৫ কিলোমিটার দূরে। এটি দেশটির প্রধান দ্বীপ টোঙ্গাতাপুতে অবস্থিত। স্থানীয় বাসিন্দা মেরে তাউফা বলেন, অগ্ন্যুৎপাত তাদের পরিবারেও আঘাত হেনেছে। তখন তারা রাতের খাবারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। হঠাৎ বিকট শব্দে তার ছোট ভাইয়ের কাছে মনে হয়েছিল, কাছে কোথাও বোমার বিস্ফোরণ ঘটেছে।

 

নিউজিল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম স্টাফডটকো ডটএনজিকে তিনি বলেন, প্রথমে আমার টেবিলের নিচে ঢুকে যাওয়ার কথা মনে হয়েছিল। ছোট বোনকে আমি আঁকড়ে ধরলাম। বাবা-মাসহ পরিবারের সবাইকে নাম ধরে ডেকে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে বললাম।

 

এরপরেই তাদের বাড়ির দিকে পানির ঢেউ আসতে দেখলেন তিনি। বললেন, পরিস্থিতি এমন ছিল যে, সব জায়গা থেকে মানুষের চিৎকার ভেসে আসছে। লোকজন নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ছুটছিলেন। সবাই উঁচু জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন।

 

টোঙ্গার ভূতাত্ত্বিক সংস্থা বলছে, আগ্নেয়গিরি থেকে গ্যাস, ধোঁয়া ও ছাইয়ের কুণ্ডলী আকাশের ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত উপরে ওঠে যায়।

 

অকল্যান্ড বিশ্ববিদ্যারয়ের আগ্নেয়গিরি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শেন ক্রোনিন বলেন, গেল তিন দশকের মধ্যে টোঙ্গায় এতবড় অগ্ন্যুৎপাত আর দেখা যায়নি। এটা একটি বড় ঘটনাই বটে। অন্তত গত এক দশকের মধ্যে বড় ধরনের উদগীরণ।

 

তিনি বলেন, এবারের উদগীরণের সবচেয় উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে, খুবই ক্ষিপ্র ও সহিংসভাবে তা ছড়িয়েছে। এই উদগীরণ অনেকটা বড়—কিছুটা বিস্তৃতভাবে ছড়িয়ে পড়েছে—অনেক বেশি ছাই উৎপাদন করেছে। আমি মনে করি, টোঙ্গায় ছাইয়ের কয়েক সেন্টিমিটার উঁচু স্তূপ জমে যাবে।

 

প্রথম আট মিনিটের উদগীরণ ছিল খুবই হিংস্র। ৮০০ কিলোমিটার দূরের ফিজি থেকে যার শব্দ শোনা গেছে। ফিজি সরকারও সুনামি সতর্কতা জারি করেছে। আর উপকূলের নিম্নাঞ্চলে বাস করা লোকজনের জন্য নিরাপদ আশ্রয় খুলে দিয়েছে।

 

প্রশান্ত মহাসাগরীয় আরেক দ্বীপরাষ্ট্র ভানুয়াতু একই ধরনের সতর্কতা জারি করেছে। আর পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখার কথা জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া সরকার।