ঢাকা, রবিবার ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪শে ভাদ্র ১৪৩১

ফেনীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে ছাত্রলীগের হামলায় আহত-২০

মুঃ ইকরামুল হক, ফেনী : | প্রকাশের সময় : বুধবার ১৭ জুলাই ২০২৪ ১০:০০:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

ফেনীতে চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ মিছিলে হামলা করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতে এক পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।  বুধবার (১৭ জুলাই) বেলা সোয়া ১১টার দিকে শহরের ট্রাংক রোডের শহীদ মিনার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, সাড়ে ১১টার দিকে ট্রাংক রোডে কোটা সংস্কারের দাবিতে বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকে। এ সময় জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তোফায়েল আহমেদ তপুর নেতৃত্বে লাঠিসোঁটা নিয়ে নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। পুলিশের উপস্থিতিতে তারা আন্দোলনকারী ছাত্রদের পাশাপাশি ছাত্রীদেরও বেধড়ক পিটুনি দেয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা ফেনী শহরের বড় বাজারে অবস্থান নিয়ে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে রেজাউল হক নামে এক পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়। তাকে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। কিছুক্ষণ পর শিক্ষার্থীরা ইসলামপুর রোডে বসে কোটা সংস্কারের দাবিতে নানা স্লোগান দেয়। এর আগে ১১টার দিকে শহরের তাকিয়া রোডে জেলা ছাত্রদল সভাপতি সালাহউদ্দিন মামুন ও সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আলম মিলনের নেতৃত্বে কোটা আন্দোলনের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। তারা ট্রাংক রোডে উঠতে চাইলে পুলিশের বাধায় পিছু হটে। এছাড়া শহরের মহিপালে ফ্লাইওভারের নিচে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নুর করিম জাবেদের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়।

 

সাজ্জাদ হোসেন নামের এক শিক্ষার্থী জানান, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের উদ্দেশ্যে শহরে আসি। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পথে পথে আমাদের বাধা ও মারধর করেন। পরে প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে দোয়েল চত্বর এলাকায় পৌঁছালে তারা অতর্কিতভাবে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে লাঠিপেটা করে। আমাদের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

 

কোটা আন্দোলনের সমন্বায়ক তাজিম জানান, সকাল থেকে শহরে আসা সাধারণ শিক্ষার্থীদের শহীদ মিনারে নিয়ে ব্যাগ তল্লাশি করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। তাদের নানাভাবে হেনস্তা করা হয়। তারা জড়ো হলে পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে। এক দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সাধারণ শিক্ষার্থীরা মাঠে থাকবে বলেও দাবি করেন তিনি।

 

ফেনী মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ রহুল আমিন জানান, পুলিশের উপস্থিতিতে হামলার বিষয়টি সঠিক নয়। ঘটনার পরপরই পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুপক্ষকে সরিয়ে দেয়।

 

ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মুহাম্মদ শাহাদাৎ হোসেন জানান, কে কার ওপর কী জন্য আক্রমণ করেছে আমরা এখনো স্পষ্ট না। এ বিষয়ে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ করছি। আশপাশের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

প্রসঙ্গত: মঙ্গলবার দুপুরে কোটা সংস্কারের দাবিতে শহরের ট্রাংক রোডের শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বাম গণতান্ত্রিক জোটের মানববন্ধনে হামলা চালায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।