বাঁধা উপেক্ষা করে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ১১তম দিনের মতো বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। এসময় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলার প্রতিবাদ জানায় তারা।
এদিন বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটক সংলগ্ন মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব ম্যুরালের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা। এসময় বিভিন্ন বিভাগের আট শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উক্তি ঘিরে গত ১৪ জুলাই রাতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ স্লোগান দিয়ে ক্যাম্পাসে মিছিল করেন। এই ঘটনার পর কড়া অবস্থান নিয়েছে শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ১৫জুলাই সকালে ক্যাম্পাসে রাজাকার বিরোধী বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে ইবি শাখা ছাত্রলীগ। এসময় ইবির মাটিতে যারা ‘রাজাকার’ স্লোগান দিবে তাদেরকে সমূলে উৎপাটন করা হবে বলে হুশিয়ারি দেন ছাত্রলীগ নেতারা। একইসঙ্গে কেউ ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট করতে চাইলে তাদের প্রতিহত করা হবে বলে ঘোষণা দেন তারা। এদিকে ছাত্রলীগের বিক্ষোভ সমাবেশের আগে হলে গিয়ে এক শিক্ষার্থীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ উঠে শাখা ছাত্রলীগের এক নেতার বিরুদ্ধে। এ ছাড়া হলে হলে গিয়ে ছাত্রলীগনেতারা কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এসবের মাঝেও আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে কোটা আন্দোলনকারীরা।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, যৌক্তিক কোটা সংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করা হচ্ছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীকেও হলে গিয়ে মারধর করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন নারী শিক্ষার্থীদের কুরুচিপূর্ণ কথা বলা হচ্ছে, আন্দোলনের সমন্বয়কসহ অংশ নেয়া বিভিন্ন শিক্ষার্থীদের হুমকি প্রদান করা হচ্ছে। তবে সকল ধরনের হুমকি অপেক্ষা করে শিক্ষার্থীসমাজ আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলে জানান তারা।
এদিকে সমাবেশে শিক্ষার্থীদের সাথে একত্মতা প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মিথিলা তানজিম বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন যৌক্তিক। তবে আমি চাই অনাগ্রসরদের জন্য কিছ কোটা রাখা হোক। তবে তোমরা আন্দোলনে ঐক্যদ্ধ হয়ে থাকবে। তাহলে দেখবে তোমরা ভয় পাবেনা। বরং তোমাদেরই ভয় পাবে।