সাভার-আশুলিয়া এলাকার স্থানীয় প্রায় দুই শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা ও ৩৫টি শ্রমিক সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আশুলিয়া থানা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। তাদের অনুরোধে সংবাদ সম্মেলনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-১৯ আসনে নৌকার মনোয়নের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন তিনি। এরমধ্যে দিয়ে স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় আশুলিয়া প্রেস ক্লাবের সামনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। আয়োজনে মুক্তিযোদ্ধা ও শ্রমিকদের পাশাপাশি স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের আওয়ামীলীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা ও দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে জাতির জনকের প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান।
মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঢাকা-১৯ আসন জনবহুল একটি এলাকা, দেশের অর্থনীতির মেরুদন্ড অর্থাৎ হাজারো শিল্প-কারখানা রয়েছে এখানে। এক সময় বিএনপির প্রভাব থাকলেও এখন আওয়ামী লীগের অন্যতম ঘাটি সাভার অর্থাৎ ঢাকা-১৯ আসন। তবে আসন্ন নির্বাচনে সাংগঠনিকভাবে দলকে আরো শক্তিশালী করতে নতুন ভাবে ভাবতে হবে আমাদের। যেহেতু আসনটিতে অধিকাংশ ভোটার আশুলিয়ায়। ফলে এখান থেকে মনোনয়ন দিলে ভোটের কৌশলেও আওয়ামী লীগ এগিয়ে থাকবে। আমার বাড়ি যেহেতু আশুলিয়ায়। ফলে এটা একটা বাড়তি সুবিধা হবে বলে আমার বিশ্বাস।
সংবাদ সম্মেলনে মুক্তিযোদ্ধা ও শ্রমিক সংগঠনের নেতাদের উপস্থিতির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি একা একা এই আসন থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী হইনি। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও স্থানীয় ৩৫টি শ্রমিক সংগঠনের নেতাসহ স্থানীয় রাজনৈতিক ও সাধারণ মানুষের অনুরোধে আমি মনোনয়ন প্রত্যাশী। আমি যখন সংবাদ সম্মেলনের কথা বলেছি। তখন তারা সবাই পাশে উপস্থিত থাকার অনুরোধ করেছেন।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এ পর্যন্ত আমার এলাকায় সৃষ্ট হওয়া শ্রমিক অসন্তোষ অগ্রভাগে থেকে শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করতে সক্ষম হয়েছি আমি। এই এলাকায় যিনি নেতৃত্ব দিবেন তাকে অবশ্যই সৎ, সাহসী এবং দূরদর্শী হতে হবে। এই ৩ টা গুণ যার না থাকবে, শ্রমিক অসন্তোষের সময় শ্রমিকদের সামনে গিয়ে দাড়ানোর সাহস কিন্তু তার থাকবেনা। এখানে ৩৫ টি শ্রমিক সংগঠনের নেতা আছে। তাদের হাজার হাজার কর্মী আছে। তাদের যেকোন সমস্যায় আমি সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছি, তাদের কথা শুনেছি, তারাও আমাকে সম্মান দেখিয়েছে। এ অঞ্চল অনেক গুরুত্বপূর্ণ, এজন্য আমি মনে করি এ অঞ্চলে সাহসী নেতৃত্বের প্রয়োজন।
আসনটিতে একাধিক মনোনয়ন প্রত্যাশীর বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এমন প্রশ্ন তুলেছিলেন কেউ কেউ। বাংলাদেশের অনেক এলাকায় আওয়ামী লীগের একাধিক মনোয়ন প্রত্যাশী রয়েছে। তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, বাগানে অনেক ফুল ফুটবে। যে ফুলটি সবচেয়ে সুন্দর, সেই ফুলটি আমি বেছে নিবো। আওয়ামী লীগ অত্যন্ত গণতান্ত্রিক সংগঠন। গণতন্ত্রে প্রতিযোগিতা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। প্রতিযোগিতা যাতে প্রতিহিংষা পরিনত না হয়। সেটিই বিবেচ্য বিষয়। দল যাকে মনোনয়ন দিবে তার পক্ষেই আমরা সকলে কাজ করবো। প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দিবেন আমি মাথা পেতে নিবো।
আয়োজনে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা ও শ্রমিক সংগঠনের নেতারা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার কাছে সাইফুল ইসলামকে মনোয়ন দেয়ার অনুরোধ তুলে ধরেন। এসময় আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান ও ইয়ারপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুমন ভুঁইয়া, ঢাকা জেলা পরিষদ সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান এনামুল হক মুন্সী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে সাভার আশুলিয়ায় কর্মরত শতাধিক গণমাধ্যমকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ঢাকা-১৯ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. এনামুর রহমান। তিনি ত্রাণ ও দূর্যোগ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের পাশাপাশি ধামসোনা ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।