জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনার সরকারের। প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে তিনি পালিয়ে যান ভারতে।
এরপর থেকে তিনি সেখানেই অবস্থান করছেন। তবে দেশটির ঠিক কোথায় তিনি অবস্থান করছেন সেটি এখনো অজানা।
হাসিনা ইস্যুতে ভারত সরকারও কোনো স্পষ্ট তথ্য দিচ্ছে না। কদিন আগে ফাঁস হওয়া এক কলরেকর্ডে শেখ হাসিনাকে বলতে শোনা যায়, তিনি ‘কাছাকাছি কোথাও’ আছেন, ‘যাতে চট করে দেশে ঢুকতে পারেন’।
ভারতে অবস্থিত দেশি-বিদেশি সংবাদমাধ্যম যখন পালিয়ে যাওয়ার পর শেখ হাসিনার প্রথম সাক্ষাৎকার প্রকাশের রণে ভঙ্গ দিয়েছে; এমন অবস্থায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমসের সাউথ এশিয়া ব্যুরো চিফ জন রিড এক কলামে বলেছেন, হাসিনা দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গেই আছেন বলে দিল্লির অভিজাতপাড়ায় আলোচনা চলছে।
এতে বলা হয়েছে, বর্তমানে নয়াদিল্লির নৈশভোজের অনুষ্ঠানগুলোতে যে ইস্যুটি আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছে তা হলো, ‘শেখ হাসিনা এখন কোথায়?’
নরেন্দ্র মোদীর সরকার নিশ্চিত করেছে, তিনি ভারতেই আছেন। তবে হাসিনার বিষয়ে আর বেশি তথ্য দিতে নারাজ ভারতীয় সরকার। ফলে বাংলাদেশের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর অবস্থান নিয়ে দিল্লির অভিজাতপাড়ায় জল্পনা-গুঞ্জন থামছে না।
এদের কেউ কেউ ঘরোয়া আলাপে বলছেন, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদকে সঙ্গে নিয়ে হাসিনা ভারতীয় সরকারের একটি সেফ হাউসে রয়েছেন। সায়মা ওয়াজেদ ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দিল্লি ভিত্তিক আঞ্চলিক কর্মকর্তার চাকরি নিয়েছেন। এমনকি তারা তাকে দিল্লির লোধি গার্ডেনে কয়েকজনের সঙ্গে ঘুরে বেড়াতেও দেখেছেন।
যদিও তথ্যগুলোর কোনটা কতটুকু সত্য তা বিবেচনার বিষয় বলে কলামে উল্লেখ করেন জন রিড।
সাংবাদিক রিডের পর্যবেক্ষণ, ভারতের রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপকভাবে সমর্থন পেয়ে থাকেন শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল তখন হাসিনার শীর্ষ সমর্থক ছিল মোদী সরকার।
তাই তার ব্যপারে সংবেদনশীলাতা বজায় রাখতে চায় ভারত সরকার, কারণ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার তাকে সাম্প্রতিক আন্দোলনে শত শত মানুষের হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী করেছে।
২০১৩ সালের বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তির মাধ্যমে হাসিনাকে ফেরত চাইতে পারে ঢাকার বর্তমান সরকার।
দেশের অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ফিন্যান্সিয়াল টাইমসকে বলেন, ভারতের সঙ্গে (স্বাক্ষরিত) প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী, আমরা তাকে (হাসিনা) বাংলাদেশের কাছে প্রত্যর্পণের দাবি জানাতে পারি। আপাতত, আমরা আশা করি ভারত তাকে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা ঘটাতে দেবে না, কারণ তিনি মিথ্যা ও ভুল তথ্য ছড়ানোর অপচেষ্টা করছেন।