ঢাকা, রবিবার ১৯ মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

রায়পুরে ২৫টি ট্রান্সফর্মার চুরি,ভোগান্তিতে গ্রাহকরা

মো: ওয়াহিদুর রহমান মুরাদ ,প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : বুধবার ১৯ জানুয়ারী ২০২২ ০৭:০৩:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন
গত ৬ মাসে প্রায় ২৫টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি করেছে চোর চক্রগত ৬ মাসে প্রায় ২৫টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি করেছে চোর চক্র ।  লক্ষ্মীপুরের রায়পুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিসের আওতাধীন এলাকা থেকে গত ৬ মাসে প্রায় ২৫টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি করেছে চোর চক্র। চুরির কারণে গ্রাহকরা নতুন ট্রান্সফরমার কিনতে গিয়ে ৭ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এ ছাড়াও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকসান হয়েছে ১০ লাখ টাকা। রায়পুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডিজিএম এএইচএম আরিফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।  
 
এলাকাবাসীর অভিযোগ, গ্রাহকদের এতো ক্ষতি হলেও ট্রান্সফরমার চোর চক্রকে আইনের আওতায় আনা যাচ্ছে না। এদিকে চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমারের অর্ধেক টাকা পরিশোধ করে গ্রাহকরা পুনরায় সংযোগ নিতে হচ্ছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়ে সংযোগ ব্যবহারকারীরা। অনেক সময় এক সপ্তাহ থেকে ১৫ দিন বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকতে হয়। 
 
 
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর জোনাল অফিসের নিয়ন্ত্রণে রায়পুর উপজেলার ১ হাজার ছয়শ কি. মি. বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের আওতায় প্রায় ৬ হাজারেরও উপরে গ্রাহক রয়েছে। বিভিন্ন গ্রামে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা চালু রাখতে স্থাপিত পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির খুঁটিতে রয়েছে ৫, ১০, ১৫ ও ২৫ কেজি ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ট্রান্সফরমার। এই ট্রান্সফরমারগুলো এখন আর নিরাপদে নেই। তামা জাতীয় মূল্যবান কয়েলের লোভে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন এলাকায় হানা দিচ্ছে ট্রান্সফরমার চোর চক্র। 
 
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই শুধু চুরি হয়েছে ৫টি ট্রান্সফরমার। এভাবে প্রতিনিয়ত চোরচক্র রাতের আঁধারে গ্রাম থেকে ট্রান্সফরমার চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। এক হিসাবে দেখা যায় গত ছয় মাসে উপজেলার হায়দরগঞ্জ, মিতালী বাজার, খাসেরহাট, চরপাতা, চরমোহনা, চরবংশীসহ প্রায় ২০টি গ্রাম থেকে ৫ কেভি ১০টি, ১০ কেভি ৮টি, ১৫ কেভি ৭টি সহ মোট ৭০টি বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। ২৫টি ট্রান্সফরমার এর মূল্য প্রায় ১৬ লাখ টাকা। সমিতির নিয়ম অনুযায়ী চুরি যাওয়া ট্রান্সফরমারের অর্ধেক মূল্য পরিশোধ করতে হয় গ্রাহকদের।
 
 
হায়দরগঞ্জ এলাকার আল আমিন নামের একজন গ্রাহক বলেন, ট্রান্সফরমার চুরি ঘটনা বিদ্যুৎ অফিসে জানালে তাঁরা থানায় মামলা দিয়ে তাদের দায়িত্ব শেষ করে। কিন্তু সমস্যায় পড়তে হয় আমাদের। তাদের অভিযোগ পুলিশ ট্রান্সফরমার চোরদেরকে আটক করতে না পারায় চুরি হওয়ায় ট্রান্সফরমার আর গ্রাহক ফিরে পায় না।
 
রায়পুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (ডিজিএম) এএইচএম আরিফুল ইসলাম বলেন, রায়পুর সম্প্রতি ট্রান্সফরমার চুরি বেড়ে গেছে। এতে করে সমিতি ও গ্রাহকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। চোররা যাতে চুরি করতে না পারে সেজন্য সমিতির পক্ষে থেকে সচেতনতামূলক লিফলেট বিলি, লোহার শিকল, নাট ওয়েল্ডিং করে ট্রান্সফরমার রক্ষার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে ৫টি মামলা দায়ের হয়েছে।
 
রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিপন বড়ুয়া বলেন, ট্রান্সফরমার চোরাই চক্রকে গ্রেফতার করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় ৫টি অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগগুলো গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে।