ঢাকা, রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এনজিওতে কন্ট্রিবিউশনের নামে বেতন থেকে কমিশন বাণিজ্য!

রিদুয়ানুল হক সোহাগ : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ২ মে ২০২৩ ০২:০৪:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন

 

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চাকুরিরত কর্মীদের বেতন থেকে সংস্থার তহবিলে কন্ট্রিবিউশনের নামে কমিশন বাণিজ্য করার অভিযোগ উঠেছে ইকো সোস্যাল ডেভলপমেন্ট অরগানাইজেশান (ইএসডিও) নামে একটি বেসরকারি এনজিওর বিরুদ্ধে।
 
ভুক্তভোগী ৮ স্থানীয় চাকুরিজীবীর অভিযোগ, প্রাপ্য নায্য বেতন থেকে কমিশনের অংশ না দেওয়ায় যোগ্যতার অযুহাতে তাদের চাকুরি থেকে অপসারণ করেছে সংস্থাটি।
 
সোমবার (১ মে) বিকেলে উখিয়া প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে অন্যায়ভাবে অপসারিতদের পুনঃনিয়োগের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে অধিকার বাস্তবায়ন কমিটি।
 
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ইউনিসেফ ও ডব্লিউএফপি'র অর্থায়নে পরিচালিত নিউট্রেশন প্রকল্পে চলতি বছরের জানুয়ারিতে বিভিন্ন পদে ভুক্তভোগী ৮ জন কে নিয়োগ দেয় ইএসডিও।
 
বেতন থেকে কমিশন দেয়া সহ সংস্থাটির অন্যায় প্রস্তাব গ্রহণ না করা এবং অনিয়মের প্রতিবাদ করায়
ভুক্তভোগীদের ১ বছর মেয়াদ থাকা সত্ত্বেও (৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত) নিয়োগের মাত্র চার মাস পর ৩০ এপ্রিল অব্যাহতি প্রদান করে সংস্থাটির মানবসম্পদ বিভাগ।
 
অপসারিত আনিকা বেগম ( ছদ্মনাম) বলেন, "৪ জানুয়ারি যোগদানের পর পরবর্তী মাসে বেতন প্রদান করা হলে ১ মাসের পূর্ণ বেতন সংস্থার তহবিলে জমা দিতে আমাদের চাপ দেওয়া হয়। আমরা অপারগতা প্রকাশ করলে পরবর্তি মাসে সংস্থার স্বার্থে বেতন অনুযায়ী পারসেন্ট নির্ধারণ করে কিছু টাকা মাসিক বেতন থেকে সংস্থার তহবিলে দেয়ার কথা বলেন প্রোগ্রাম ম্যানেজার।"
 
অপর এক ভুক্তভোগী ইমরান হোসেন (ছদ্মনাম) বলেন, " আমার নির্ধারিত বেতন ছিলো ৪৪ হাজার টাকা, আমাকে বেতন পাওয়ার পর প্রতিমাসে ১৯ হাজার টাকা করে সংস্থার তহবিলে জমা না দিলে চাকুরিচ্যুত করার হুমকি দেওয়া হয়। আমরা নতুন ৮ জন এই অবৈধ আবদার না মানায় আমাদের অব্যহতি দেয় ইএসডিও।"
 
সংবাদ সম্মেলনে অধিকার বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার রবিউল হোসাইন বলেন, " শুধু ইএসডিওই নয় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত নোয়াখালী, সিলেট, ঠাকুরগাও সহ বিভিন্ন এলাকা ভিত্তিক এনজিও কক্সবাজারের স্থানীয় চাকুরিজীবীদের কাছ থেকে ম্যানেজমেন্ট কস্ট কিংবা সংস্থার তহবিলের জন্য বেতন থেকে কমিশন নেয়ার নামে হয়রানি করছে। অমান্য করলে করা হচ্ছে চাকুরিচ্যুত, আমরা চাই ইএসডিও সহ অন্যান্য সংস্থা থেকে চাকুরি হারানো স্থানীয়দের পুনঃনিয়োগ করা হোক।"
 
আরআরআরসি, জেলা প্রশাসন, দাতা সংস্থা সহ সংশ্লিষ্টদের তদন্ত করে এধরনের অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত ইসএসডিও সহ অন্যান্য এনজিওগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করতে সমন্বিত মনিটরিং টিম করার দাবি জানান তিনি।
 
কর্মী অপসারণ প্রসঙ্গে ইএসডিওর প্রোগ্রাম ম্যানেজার মাসুকুল হক মাসুক বলেন," দাতা সংস্থার পদভিত্তিক যোগ্যতা সংক্রান্ত চাহিদা পূরণ করতে ৮ জন কর্মীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।"
 
তবে বেতন থেকে কমিশন নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
 
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন সজীব বলেন, " কমিশন না দেওয়ায় চাকুরি থেকে ৮ স্থানীয় কে একটি এনজিও থেকে অপসারণের অভিযোগটি শুনেছি, বিষয়টি যাচাই করা হচ্ছে। দুপক্ষের সাথে কথা বলার পর তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"