ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

লাভ ছাড়া আর টিকা বিক্রি করবে না অ্যাস্ট্রাজেনেকা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশের সময় : শনিবার ১৩ নভেম্বর ২০২১ ০৩:০০:০০ পূর্বাহ্ন | আন্তর্জাতিক

 

বহুল পরিচিত করোনা টিকা অক্সফোর্ড-অ্যস্ট্রাজেনেকার প্রস্তুতকারী কোম্পানী অ্যাস্ট্রাজেনেকার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন থেকে লাভ ছাড়া আর টিকা সরবরাহ করবে না তারা। টিকার ডোজ বিক্রির ক্ষেত্রে আর্থিক মুনাফাকেই প্রাধান্য দেওয়া হবে।

 

এজন্য টিকার নতুন মূল্য নির্ধারণ করবে কোম্পানি, তবে তা যে খুব বেশি হবে- এমন নয়। বিশ্বের অধিকাংশ দেশের নাগলের মধ্যেই রাখা হবে টিকার দাম। আগামী বছর থেকে এই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

শুক্রবারএক বিবৃতিতে জানিয়েছে সুইডেনভিত্তিক বহুজাতিক এই টিকা ও ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ, ‘কোম্পানি এখন থেকে পরিমিত ও গ্রহণযোগ্য মুনাফা অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে তার যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করবে। দ্রুতই এই নতুন ব্যবস্থার মধ্যে ঢুকবে কোম্পানি।’

 

কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহী প্যাসক্যাল সোরিয়ট বিবিসিকে এ সম্পর্কে বলেন, দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে টিকা সহায়তা প্রদান বিষয়ক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রকল্প কোভ্যাক্স ইনিশিয়েটিভসে ২৫ কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার কথা রয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকার। চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই এসব ডোজ কোভ্যাক্সে পাঠাতে হবে।

 

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে টিকা সহযোগিতা দেওয়ার পর আগামী বছর থেকে মুনাফাভিত্তিক উৎপাদনের দিকে ঝুঁকবে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।

 

প্যাসকেল সোরিয়ট বলেন, ‘আমরা আগে ঘোষণা দিয়েছিলাম, যতদিন পর্যন্ত করোনা বৈশ্বিক মহামারি থাকবে, ততদিন আমরা টিকা থেকে মুনাফার আশা করব না; কারণ আমাদের কোম্পানির নীতি হলো জনগণের স্বাস্থ্য আগে, তারপর মুনাফা।’

‘আমরা আমাদের কথা রেখেছি। অন্যান্য কোম্পানি যখন টিকা বিক্রি করে মুনাফা করছিল, আমরা তখন দরিদ্র ও অনুন্নত দেশগুলোকে যতখানি সম্ভব স্বল্পমূল্যে টিকা সরবরাহ করেছি।’

 

‘এখন আমাদরে বিবেচনা হলো- করোনা এখন আর আগের মতো ভয়াবহ বৈশ্বিক মহামারির পর্যায়ে নেই। একটি একটি স্থানীয় রোগে পরিণত হচ্ছে; সুতরাং, আমার মনে হয়, এখন থেকে আমরা টিকা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে মুনাফার ব্যাপারটিতে মনোযোগ দিতে পারি। আগামী বছর থেকে আমরা মুনাফাভিত্তিক উৎপাদনে যাচ্ছি।’

 

‘তবে আমরা যে ব্যাপক মুনাফার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছি- এমন নয়। টিকার দাম সব দেশের নাগলের মধ্যে রাখা হবে।’

 

করোনা টিকা অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা, ফাইজার-বায়োএনটেক ও মডার্না কাছাকাছি সময়েই ডব্লিউ এইচওর ছাড়পত্র পেয়ে বাজারে এসেছে। ফাইজার-বায়োএনটেক ও মডর্না শুরু থেকেই মুনাফার ভিত্তিতে টিকা বিক্রির নীতি নেওয়ায় আর্থিক লাভের দিক থেকে তারা অ্যাস্ট্রাজেনেকার চেয়ে অনেক এগিয়ে আছে।

 

তবে তা নিয়ে কোম্পানি কর্তৃপক্ষের কোনো আফসোস নেই বলে বিবিসিকে বলেছেন প্যাসক্যাল সোরিয়ট।

 

অ্যাস্ট্রাজেনেকার শীর্ষ নির্বাহী এ সম্পর্কে বলেন, ‘এ নিয়ে আমাদের কোনো আফসোস নেই। তারা (ফাইজার, মডার্না) তাদের নীতি অনুযায়ী কাজ করেছে, আমরা আমাদের নীতি মেনে চলেছি।’

 

‘বরং আমরা সবসময় গর্ব অনুভব করি এই ভেবে, আমাদের টিকা বিশ্বের লাখ লাখ দরিদ্র মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে, পাশাপাশি তাদের গুরুতর অসুস্থতা ও হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস করেছে।’