![](https://dainikbayanno.com/storage/untitled-1-210.jpg)
অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের সংস্কারের পেছনে অন্যকোনো উদ্দেশ্য আছে কিনা তা দেখা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
তিনি বলেন, কোনো কালবিলম্ব না করে সময়মতো, যৌক্তিক টাইমে নির্বাচন দিন, সবাই স্যালুট জানাবে।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ১২ দলীয় জোটের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এ মন্তব্য করেন। সংবিধান ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার গণতান্ত্রিক সংস্কার, অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে প্রণীত ‘রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে ১২ দলীয় জোট।
গয়েশ্বর রায় বলেন, জনগণ অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করছে। এই অদৃশ্য শক্তিকে দৃশ্যমান করতে হবে। একজন ষড়যন্ত্র করে কাপড় নিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এখন যারা নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করছেন, তারা আগামী দিনে কাপড় পরেও পালানোর পথ পাবেন না।
রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা বলেন এক কথা, তার সহকারীরা বলেন আরেক কথা। প্রধান উপদেষ্টার কথা উপদেষ্টামণ্ডলীর সবার কথা কিনা সে ব্যাপারেও আমাদের সন্দেহ আছে।
ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে ভাঙচুরের প্রসঙ্গে টেনে গয়েশ্বর বলেন, ৬-৮ আগস্ট যদি ৩২ নম্বরের বাড়ি ভাঙচুর করে পুকুর তৈরি করে মাছ চাষ করা হতো তাহলে কেউ কিছু বলতো না। ৬ মাস পরে আমাদের এই চেতনা বোধ এলো কেন? আমার যদি ব্যাক ট্র্যাডিশন তৈরি করি, তাহলে আগামী দিন আপনার আমার বাড়ি ভাঙচুর হবে। ভাঙচুরের নামে বাজে ট্র্যাডিশন চললে সংস্কার করে কী লাভ?
বর্তমান সরকারকে পেছন থেকে কারা ইন্ধন দিচ্ছে তা দেশের মানুষ জানে বলেও মন্তব্য করেন গয়েশ্বর। তিনি বলেন, ইসলামের নামে কারা দখলবাজি করছে তা বিভিন্ন দপ্তরে গেলে তা জানা যাবে।
গয়েশ্বর বলেন, বিএনপির ৩১ দফা একটি জাতীয় সনদ। ৬২টি দল একমত হয়ে এই সদন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
কর্মশালায় সভাপতির বক্তব্যে ১২ দলীয় জোটের প্রধান ও জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার বলেন, ৩১ দফা আজকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে অত্যন্ত সরব এবং বহুল চলমান একটি বিষয়। এটি বস্তুত পক্ষে পুরো বাঙালি জাতির মনের আঙ্ক্ষাকার প্রতিফলন ঘটবে। এ ব্যাপারে আমাদের কারো কোনো দ্বিমত নেই। আমরা রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে অক্ষরে অক্ষরে প্রতিটি দফা বাস্তবায়ন করব।
জোটের মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপি চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারী সরকারের জুলুম ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করেছি। চূড়ান্তভাবে প্রতিদিন রাজপথে ছিলাম। জুলাই-আগস্টের যে অভ্যুত্থান, আমরা বিগত ১৫ বছর বিশ্বাস করতাম এই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতন হবে। হঠাৎ করেই গণঅভ্যুস্থানের সৃষ্টি হয় না। বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কথা শুনে, ধৈর্য ধরে আগামীর ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ শুরু করে দিয়েছি।
১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা বলেন, ৫ আগস্ট একটি স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ১৬ বছরের এক ভয়ংকর দানব, ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারকে উৎখাত করেছি। ১৬ বছরে তারা দেশটা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। রাষ্ট্রের প্রত্যেকটি কাঠামোকে ধ্বংস করা হয়েছিল। গণতন্ত্র, ভোটাধিকার ও মানবাধিকারকে ধ্বংস করেছে।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, বিকল্পধারা বাংলাদেশের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী, জাগপার সিনিয়র সহ-সভাপতি রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ প্রমুখ।