লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটার কক্ষ তিন সপ্তাহ ধরে বন্ধ রাখা হয়েছে। গাইনি সার্জন চিকিৎসকের অভাবে অস্ত্রোপচার সেবা বন্ধ থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন অন্তঃসত্ত্বা নারীরা। স্বল্প মূল্যের সেবা বঞ্চিত হয়ে বাড়তি অর্থ খরচে তাঁদের এখন বেসরকারি হাসপাতালের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে।
প্রসবজনিত জরুরি সেবা (ইওসি) টিমের সদস্য (গাইনি) ডাঃ শামীমা নাসরিন বদলি হয়ে গত ১৬ জানুয়ারি অন্যত্র চলে যান। এরপর থেকে চিকিৎসকের অভাবে অপারেশন থিয়েটারটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রতিদিন অসংখ্য গর্ভবতী নারী এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। তাঁদের মধ্যে স্বাভাবিক প্রসব করানো সম্ভব হলেও জরুরি অস্ত্রোপচার (সিজার) করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ কারণে অনেক গরিব রোগী আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।
২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত ৩৪৪ জন গর্ভবতী নারী এখানে সন্তান জন্ম দেন। এর মধ্যে ১৭৯ জন স্বাভাবিক ও ১৬৫ জন অস্ত্রোপচারে সন্তান প্রসব করেন।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অপারেশন থিয়েটারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সেবিকা ইয়াসমিন আক্তার বলেন, ‘গর্ভবতী নারীদের স্বাভাবিক প্রসব ও পরামর্শ সেবা চালু রয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের অভাবে কোনো অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হচ্ছে না। গরিব রোগীদের কান্না আমাদেরও কষ্ট দিচ্ছে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অবেদনবিদ) মোবারক হোসেন বলেন, ‘ইওসি টিমে একজন গাইনি চিকিৎসকের অভাবে আমাদের এখানে আপাতত কোনো অস্ত্রোপচার করা সম্ভব হচ্ছে না। রোগীরা চোখের সামনে কান্না শুরু করলেও তাঁদের জন্য কিছু করতে না পারায় আমরাও কষ্টে রয়েছি।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জাকির হোসেন বলেন, প্রসবজনিত জরুরি সেবা (ইওসি) বিভাগে একজন গাইনি চিকিৎসকের অভাবে অপারেশন (সিজার) করা সম্ভব হচ্ছে না। এ কারণে অপারেশন থিয়েটারটি বন্ধ রাখা হয়েছে। নতুন চিকিৎসকের পদায়নের জন্য আমরা সিভিল সার্জন অফিসের মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্মীপুরের সিভিল সার্জন ডা. আহমেদ কবির বলেন, ‘আমি কয়েক দিন আগে এ জেলায় যোগদান করেছি। বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবহিত হয়েছি। দ্রুত একজন চিকিৎসকে পদায়নের জন্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’