ঢাকা, রবিবার ১৯ মে ২০২৪, ৫ই জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

৪ ঘণ্টা পর গয়েশ্বরকে ছেড়ে দিল পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক: | প্রকাশের সময় : শনিবার ২৯ জুলাই ২০২৩ ০৪:৪০:০০ অপরাহ্ন | রাজনীতি

ধোলাইখালে সংঘর্ষের পর বিএনপির এই নেতাকে ধরে নিয়েছিল পুলিশ। ধোলাইখালে সংঘর্ষের পর আটক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। শনিবার সকাল ১১টায় ধোলাইখালে অবস্থান কর্মসূচি পালনে গয়েশ্বরের নেতৃত্বে বিএনপির নেতা-কর্মীরা জড়ো হলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে পুলিশের।

 

সেখান থেকে সাড়ে ১১টার দিকে আহত অবস্থায় গয়েশ্বরকে আটক করেছিল পুলিশ। তখন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার খন্দকার নুরুন্নবী বলেছিলেন, “ধোলাইখাল এলাকায় মিছিল বের করে দুর্ভোগ সৃষ্টির চেষ্টা করছিলেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। সেজন্য তাকে আটক করা হয়েছে।”

 

এরপর বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে গয়েশ্বর রায় পুলিশ হেফাজত থেকে মুক্ত হয়ে নয়া পল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে উপস্থিত হন।

 

এরপর যোগাযোগ করা হলে ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের উপকমিশনার ফারুক হোসেন বলেন, “প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে ছেড়ে দেওয়া হয়।”

 

নির্দলীয় সরকারের দাবিতে সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে নামা বিএনপি শনিবার ঢাকার প্রবেশমুখগুলোতে অবস্থান কর্মসূচি দিয়েছিল।

 

বিএনপির কর্মসূচির স্থান ছিল পুরান ঢাকার নয়া বাজার, যাত্রাবাড়ী, গাবতলী এবং আবদুল্লাহপুর। তবে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ সমর্থকদের বাধার মুখে কোথাও অবস্থান নিতে পারেনি দলটির নেতা-কর্মীরা।

 

নয়া বাজারে অবস্থান নিতে না পেরে বিএনপিকর্মীরা ধোলাইখালে দিকে সরে যান। সেখানে গয়েশ্বর রায়ের নেতৃত্বে মিছিল বের করতে গেলে পুলিশ লাঠি চালালে বেঁধে যায় সংঘর্ষ।

 

সকাল সাড়ে ১১টায় নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন গলি থেকে জাতীয় পতাকা হাতে বেরিয়ে আসেন এবং খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নামে স্লোগান দিতে থাকেন।

 

গয়েশ্বর রায়ের পাশাপাশি বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ সেখানে ছিলেন।

 

এ সময়ে জনসন রোড থেকে আর্র্মড পার্সোনাল ক্যারিয়ার (এপিসি) ও প্রিজন ভ্যান নিয়ে পুলিশ ধোলাইখালের দিতে এগোতে থাকে। পুলিশ ধাওয়া দিলে বিএনপিকর্মীরা ইট ছুড়তে শুরু করে। পাল্টা পুলিশ কাঁদুনে গ্যাস ও রবার বুলেট ছোড়ে।

 

আধা ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চলার মধ্যে গয়েশ্বর রায়কে ঘিরে ফেলে পুলিশ।

 

মহানগর বিএনপি দক্ষিণের কর্মী আবদুস সোবহান বলেন, “গয়েশ্বর চন্দ্র দাদা যখন নেতা-কর্মীদেরকে ইট ছুড়তে বারণ করছিলেন এবং পুলিশের দিক থেকে ইট না মারতে বলছিলেন, ঠিক সময়ে সময়ে পুলিশের দিক থেকে আসা একটি ইটের টুকরো দাদার মাথার বাম দিকে এসে লাগে। দাদা সঙ্গে সঙ্গে সাদা টুপি মাথা থেকে খুলে দেখেন, রক্ত ঝরছে।

 

“এ সময় পুলিশ দাদাকে ঘিরে ফেলে টানা-হেঁচড়া করতে দেখেছি আমি। দাদার সাথে থাকা নেতা-কর্মীদের লাঠিপেঠা করে। দাদাও লাঠিপেঠা থেকে রক্ষা পাননি।”

 

এসময় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদও লাঠিপেটার শিকার হন। একজন যুবদলকর্মীকে বেধড়ক পেটায় পুলিশ।

 

ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে রাস্তায় পড়ে যান গয়েশ্বর। এসময় পুলিশ সদস্যরা তাকে লাঠিপেটাও করে বলে একটি ভিডিওতে দেখা যায়। সেই অবস্থায় গয়েশ্বরকে তুলে একটি বদ্ধ দোকানের শাটার খুলে তার ভেতরে ঢোকায় পুলিশ। পরে দোকান থেকে বের করে তাকে গাড়িতে তোলে পুলিশ।

 

সেখানে পুলিশের কয়েকজন সদস্যের মাথা ফেটেছে জানিয়ে ডিএমপির লালবাগ জোনের উপকমিশনার জাফর হোসেন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, “গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।”

 

গয়েশ্বরের সঙ্গে থাকা যুবদলের কর্মী শাহীন ইসলাম জানান, ধোলাইখাল থেকে গয়েশ্বর রায়কে প্রথমে ওয়ারী থানায় নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাকে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নেওয়া হয়। তার প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে নেওয়া হয় মিন্টো রোডে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কার্যালয়ে। সেখানেই তিনি মধ্যাহ্নভোজ সারেন।

 

সেখান থেকে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে একটি সাদা হাইয়েস মাইক্রোবাসে করে পুলিশ গয়েশ্বর রায়কে নয়া পল্টনের অফিসে নামিয়ে দিয়ে যায়।