বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আমি বলতে বাধ্য, ৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি, সম্মুখ সারি থেকে যুদ্ধ করেছি। যুদ্ধে আমার কাছের অনেক বন্ধু-বান্ধব শহীদ হয়েছেন। শহীদের রক্তের বিনিময়ে লেখা সংবিধান, সেই সংবিধানকে যখন কবর দেওয়ার কথা বলা হয়। তখন কিন্তু আমাদের কষ্ট লাগে।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) নয়াপল্টন আনন্দ কমিউনিটি সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির নবনির্বাচিত নেতৃবৃন্দের মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ওই সংবিধানে যদি খারাপ কিছু থাকে নিশ্চয়ই সেটা বাতিলযোগ্য। তবে সংবিধান রাফ খাতা নয় যে ছুঁড়ে ফেলব। যদি নতুন কোনো সংবিধান লিখতে হয় তাও তো লিখতে হবে আগের অমুক সালের সংবিধান বাতিল করে এই সংবিধান জারি করা হলো। সুতরাং এই সংবিধানকে সংশোধন করা যাবে। মাথা ব্যথা হলে মাথা কেটে ফেলতে হয় না, ওষুধ খেতে হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, দুদিন আগেও পতিত স্বৈরাচারের দোসরকে সচিবালয়ে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এভাবে আপনারা কী সংস্কার করবেন? জাতির মনে প্রশ্ন জাগে, আমার মনেও প্রশ্ন জাগে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, ভুল বুঝবেন না। কবর দিয়ে দেব, মেরে ফেলব, কেটে ফেলব। কথাগুলো কিন্তু ফ্যাসিবাদের মুখের কথা। এ কথাগুলো কিন্তু ভালো কথা নয়। জাতি তাকিয়ে আছে তোমাদের দিকে, আমরাও তাকিয়ে আছি তোমাদের দিকে। তোমাদের (বৈষম্য বিরোধী ছাত্রনেতারা) মুখ থেকে এ ধরনের কথা আমরা আশা করি না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেস কনফারেন্সের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি আরও বলেন, অহংকার আল্লাহ তায়ালা পছন্দ করেন না, হাসিনা অহংকার করেছিলো, পতন হয়ে গেছে। অহংকারী কথাবার্তা বলতো, পতন হয়ে গেছে। সুতরাং এমন কথা না বলাই ভালো যা আল্লাহ পছন্দ করেন না, দেশের মানুষ পছন্দ করেন না।
মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপি কখনো ক্ষমতা যাওয়ার কথা বলে না, সে কথা ভাবে না। আমাদের দল ভোটাধিকারের কথা বলে। নির্বাচন দেশের মানুষের অধিকার এর জন্য আমরা জীবন দিয়েছি, জেল খেটেছি। নির্বাচন হলে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে, এটা বিএনপি বা আমরা ভাবি না। এ কথা ভাবে সাধারণ মানুষ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সহ-সমাজ কল্যাণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, ঢাকা মহানগর দক্ষিনের আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, যুগ্ম আহ্বায়ক আনম সাইফুল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার, ফরহাদ হোসেন, সাইদুর রহমান মিন্টু (দপ্তর), ফজলে রুবায়েত পাপ্পুসহ আরও অনেকে।