ঢাকা, শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭শে বৈশাখ ১৪৩১

বগুড়ায় ১০০ টাকায় পুলিশের চাকরি পেলেন ৭১ জন

বগুড়া প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : শনিবার ২৭ নভেম্বর ২০২১ ০৭:২১:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ১০০ টাকা ব্যয়ে বগুড়ায় ৭১ জন তরুণ-তরুণী পুলিশ কনস্টেল পদে চাকরি পেয়েছেন। ২৬ নভেম্বর শুক্রবার রাত ৯ টায় জেলার পুলিশ লাইন্স অডিটরিয়ামে জেলার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী এ তথ্য জানান। এ সময় সদ্য নিয়োগ পাওয়া তরুণ-তরুণীদের অভিনন্দন জানিয়ে ফুলের শুভেচ্ছা জানানো হয়। 

জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মুক্তিযুদ্ধে প্রথম প্রতিরোধকারী বাহিনী বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি অব্যাহত রাখতে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রেখে শুধু মেধা এবং প্রয়োজনীয় যোগ্যতার ভিত্তিতেই এবারে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগ সম্পন্ন করা হয়েছে। এই নিয়োগের ক্ষেত্রে কোথাও যাতে কোনও আর্থিক লেনদেন বা অন্য কোনও অনিয়ম না হয় সে ব্যাপারে গোপন তৎপরতা অব্যাহত রেখেই কনস্টেবল নিয়োগে সুষ্ঠুভাবে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের প্রায় কয়েক মাস আগে থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা, লিফলেট বিতরণ এবং জেলার বিভিন্ন স্থানে ব্যানার টাঙানো হয়েছে। এবার আর্থিক লেনদেনসহ সব অনিয়ম ও সুপারিশ পরিহার করে সুষ্ঠুভাবে পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগের বিষয়টি সম্পন্ন করতে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়।

জানা যায়, ৭১ জন নিয়োগপ্রাপ্ত কনস্টেবলের মধ্যে অধিকাংশ অতিদরিদ্র পরিবার থেকে এসেছে। এরমধ্যে ৬০ জন পুরুষ সদস্য ও ১১ জন নারী সদস্য নিয়োগ পেয়েছেন। 

এ সময় অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আলী হায়দার চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর পাবনা) শেখ জিন্নাহ আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম ( সদর সিরাজগঞ্জ) উপস্থিত ছিলেন। 

উল্লেখ্য, ১৬ নভেম্বর থেকে পুলিশ কনস্টেবলের নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে লাইনে দাঁড়ায় জেলার ১২ উপজেলার ২০৮০ জন চাকরি প্রত্যাশী তরুণ-তরুণী। পরে শারীরিকভাবে যোগ্য ২৪৪ জন প্রার্থীকে মৌখিক পরীক্ষার জন্য নির্বাচিত করা হয়। রানী খাতুন জানান, মাত্র ১০৩ টাকা খরচ করে পুলিশের চাকরি পাব কল্পনাও করিনি। পুরো বিষয়টি স্বপ্নের মত লাগছে।

শেরপুর উপজেলার সাউদিয়া পার্ক এলাকার অতিদরিদ্র ঘরের মেয়ে সাগরিকা মাহাতো। তার বাবা চাউল কলের শ্রমিক। চূড়ান্তভাবে পুলিশে নির্বাচিত হওয়ায় সাগরিকা জানান,  তিন বোনের সংসার। খুব কষ্ট করে বাবা আমাদের সংসার চালান। আজ এভাবে পুলিশের মত একটা বাহিনীতে কাজ করার সুযোগ পাব তা কখনও ভাবতে পারিনি। এখন আমার পরিবার বুক উঁচু করে বাঁচতে পারবে। 

পুরষদের মধ্যে মেধা তালিকায় প্রথম হওয়া আশিকুর রহমান বলেন, আমি কল্পনাও করতে পারিনি আমার একশ টাকায় পুলিশে চাকরী হবে। আমার ধারনা ছিল যদি আমি পরীক্ষাতেও পাশ করি তাহলে হয়তো ঘুষ দিতে হবে। কিন্তু আমার ধারনাকে ভুল প্রমাণ করে কোন ঘুষ ছাড়াই পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদ পাশ করলাম।

এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(প্রশাসন) আলী হায়দার চৌধুরী, সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম, পাবনা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মোঃ জিন্নাহ আল মামুন,  সকল থানার ওসি  ও জেলার ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা।