ঢাকা, সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

অব্যবস্থাপনা বাজার কারনে পর্যটকদের নেতিবাচক প্রভাব থানচি বাজার।

থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি :: | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ০৯:০৮:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন
 
 
 
সারাদেশে পর্যটকদের প্রিয় দর্শনীয় স্থান হিসেবে বান্দরবান থানচি উপজেলা খুবই পরিচিত ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ভরপুর পর্যটন এলাকা। বছরে হাজার হাজার পর্যটক বেড়াতে আসেন এই উপজেলায়।
 
এই উপজেলা কে পর্যটন বান্ধব গড়ে তুলতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি নানান মুখী উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন।
 
জানা যায়, মন্ত্রীর উন্নয়ন পরিকল্পনা না মেনে বাজারের মধ্যখানে ঝুপড়ির দোকান খুলে কাঁচামাল ব্যাবসা শুরু করেছে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। এতে বাজারের সৌন্দর্য নষ্ট হবার পাশাপাশি বেড়াতে আসার অসংখ্য পর্যটক দের মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব পরেছে বলে অভিযোগ পর্যটক সংশ্লিষ্টরা। বেড়াতে আসা প্রত্যেক পর্যটকদের সদর বাজারের বিজিবি চেকপোস্ট হয়ে সাঙ্গু নদীর পথে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য স্থান দেখতে যেতে হয়। 
 
কিন্তু, অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা বিগত ২০২০ সালে করোনা মহামারি সময় থানচি বাজার আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সেই সময় সর্বস্ব হারানো অসহায় ব্যবসায়ীদের মানবিক বিবেচনা করে উপজেলা পরিষদ থেকে অস্থায়ী ভাবে পর্যটক তথ্য সেবা কেন্দ্রের আশেপাশে  ব্যবসা চালিয়ে যেতে স্থান দেয়া হয়। সেই সাথে তাঁদের স্থায়ী ভাবে ব্যবসা করার সুবিধার্থে শুরু হয় একটি আলাদা ভবন নির্মাণের কাজ। ইতিমধ্যে মাছ মাংস বিক্রেতারা স্থানান্তর হয়ে নতুন ভবনের ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। অন্যান্য কাঁচা তরিতরকারি ও শুঁটকি মাছ বিক্রেতাদের পর্যটক তথ্য সেবা কেন্দ্রের পেছনের দিকে সমস্ত সুযোগ সুবিধা দিয়ে পর্যটন বান্ধব পরিবেশে ব্যাবসা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ব্যবস্থা অনুযায়ী সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন কালে কাঁচা তরিতরকারি ও শুঁটকি ব্যবসায়ীরা বাজারের মধ্যখানে চলে যায় এবং সেখানে বাজার সৌন্দর্য নষ্ট করে ত্রিপল টাঙিয়ে বেচাকেনা শুরু করে দিয়েছে। 
 
এই বিষয়ে শুঁটকি ও তরিতরকারি ব্যবসায়ীদের জানতে চাওয়া হলে তারা সবাই একই সুরে বলেন, বাজার কমিটি আমাদেরকে এই জায়গায় বাজার বসতে দিয়েছেন। তাই আমরা এখানে বাজার বসেছি।
 
এই নিয়ে থানচি বাজার পরিচালনা কমিটি সভাপতি, স্বপন কান্তি বিশ্বাস বলেন, কাঁচা বাজার ব্যবসায়ীরা কার কথায় বাজারের মাঝখানে বাজার বসেছে এই ব্যাপারে আমার জানা নেই। তবে বাজারে বাজার না বসলে তারা কোথায় বাজার বসবে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্ত সুযোগ সুবিধা দিয়ে যদি তাঁদের স্থানান্তরিত করা হলে, আমার মনে হয় কাঁচামাল ও শুঁটকি ব্যবসায়ীরা নিশ্চয়ই প্রশাসনের নির্দেশনা মেনে নিবেন।
 
এই বিষয়ে থানচি বাজার চৌধুরী খামলাই ম্রো এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,  ব্যবসায়ীরা যদি বাজারে ব্যবসা না করলে আর কোথায় ব্যবসা করবে তারা। তারপরও আমি ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে দেখব, তারা আসলে কি চায়। 
 
এই বিষয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থোয়াইহ্লা মং মারমা বলেন, বান্দরবান জেলায় সকল উপজেলার মধ্যে থানচি হচ্ছে সবচেয়ে পর্যটকদের প্রিয় দর্শনীয় উপজেলা। এই উপজেলায় প্রতি বছর নতুন নতুন পর্যটকদের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই এই উপজেলা কে পর্যটক বান্ধব হিসেবে গড়ে তুলতে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি দিকনির্দেশনায় আমরা এগিয়ে চলেছি। এমনকি একটি সূদুর প্রসারী উন্নয়নের মহা পরিকল্পনা হাতে নিয়ে উন্নয়নের দিকে অগ্রসর হচ্ছি। ঠিক এমন সময় একটি মহল নিরীহ ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে বর্তমান সরকারের উন্নয়ন ধারাকে বাঁধা সৃষ্টি করা শুরু করছে । তিনি আরো বলেন, থানচি বাজার আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর আমি নিজেই দিনের পর দিন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মহোদয়ের কাছে গিয়ে বাজারের ব্যাবসায়ীদের সুবিধার্থে একটি ভবন নির্মাণ করে দিয়েছি।  পরিকল্পনাটি ছিল, পর্যটক তথ্য সেবা কেন্দ্রে অস্থায়ী  ভাবে থাকা ব্যবসায়ীরা সামন্য স্থান পরিবর্তন করে পর্যটক তথ্য সেবা কেন্দ্রের পেছনের দিকে বিশাল  জায়গায় উপর স্থায়ী ভাবে ব্যবসা করবে। এই ব্যাপারে তিনি পর্যটক তথ্য সেবা কেন্দ্রে আশেপাশে থাকা দোকানদারদের সাথে কথা বলে তাঁদের সম্মতি নেয়া হয়েছে। এসবের পরেও কাঁচা তরিতরকারি ও শুঁটকি ব্যবসায়ীরা  বাজারের মাঝখানে সৌন্দর্য নষ্ট করে কেন বাজার বসতে চায় এটা আমার বোধগম্য নয়।   
 
এই বিষয়ে বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম কাউসার এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,  পর্যটন খাতে যদি কেউ বিঘ্ন সৃষ্টি করার চেষ্টা করলে তদন্ত সাপেক্ষে সকল ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।