ঢাকা, রবিবার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

আগামী মাস থেকে ডিজিটাল হচ্ছে বিমান টিকিটিং

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : বুধবার ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২ ০৪:০৯:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

আগামী মাস থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ডিজিটালাইজড হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বলাকা ভবনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স লিমিটেডের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০২২ সালের মার্চ মাস থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পেসেঞ্জার সার্ভিস সিস্টেমকে সম্পূর্ণ ডিজিটালাইজড করে দেওয়া হচ্ছে। এর মাধ্যমে অনলাইনে টিকিটিং, রিজারভেশন, বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর চেক-ইন সবকিছু অনলাইনে হবে। এটা আমাদের প্রবাসীদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। আন্তর্জাতিকভাবে পৃথিবীর সবদেশে এই ব্যবস্থা রয়েছে। আমরা এক্ষেত্রে একটু পিছিয়ে ছিলাম।  

তিনি বলেন, আমি যতবার দেশের বাইরে গিয়েছি, সবসময় আমার একটা লক্ষ্য ছিল যে, আমাদের নিজেদের বিমান ব্যবহার করব। কিন্তু আমার নিজের অভিজ্ঞতা আছে তখন বিমানের কী বিধ্বস্ত অবস্থা ছিল। ৯৬ সালে যখন আমরা সরকার গঠন করি তখন উদ্যোগ নিই। যদিও তখন আর্থিকভাবে অনেক সীমাবদ্ধতা ছিল, তার মধ্যেও আমরা চেষ্টা করেছিলাম বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উন্নয়নে আরো কিছু উড়োজাহাজ বহরে যুক্ত হোক। আমাদের আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো আরও চালু হোক, সেভাবে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছিলাম। মাত্র পাঁচ বছর হাতে সময় সেভাবে কাজ করে যেতে পারিনি। তবুও আমরা কাজ করেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয়বার আমি যখন সরকারে আসি ২০০৮ নির্বাচনে জয়ী হয়ে, ২০০৯-এ আমরা লক্ষ্য করি বাংলাদেশ বিমান নিউইয়র্ক, ব্রাসেলস, প্যারিস, ফ্রাঙ্কফুর্ট, মুম্বাই, নারিতা এবং ইয়াঙ্গুন রুটে যে ফ্লাইট চলাচল করতো সেগুলো সব লোকসান দেয় এবং একে একে সব বন্ধই করে দিতে হয়। আওয়ামী লীগ সরকারে দায়িত্ব নেওয়ার পর এই যে জরাজীর্ণ একটা বিমান, এমনকি একটা গানও শোনা যেত না, যদি আমি জানলার সিটে বসতাম তখন তো ঝরঝর করে পানি পড়ত। কোনোমতে কাপড় দিয়ে সে পানি বন্ধ করা হত। এমনই আমাদের বিমানের দুর্দশা ছিল। বরং আমি আমাদের পাইলটদের সবসময় ধন্যবাদ জানাতাম যে এ ধরনের অবস্থায় সাহস করে তারা যে বিমান চালাচ্ছে এটাই একটা বড় জিনিস ছিল।

তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন ব্যবস্থা নিই। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে বর্তমানে ৪টি বৃহৎ পরিসরের বোয়িং-৭৭৭-৩০০-ইআর, চতুর্থ প্রজন্মের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত ৪টি ৭৮৭-৮ ও ২টি ৭৮৭-৯ সহ মোট ৬টি ড্রিমলাইনার, ৬টি ৭৩৭-৮০০ এবং ৫টি ড্যাশ-৮-৪০০ উড়োজাহাজ রয়েছে। এই ২১টি উড়োজাহাজের মধ্যে ১৮টি উড়োজাহাজই বিমানের নিজস্ব মালিকানাধীন। অনেকগুলো আমাদের সময়েই সংগ্রহ বা ক্রয় করা। 

সরকারপ্রধান বলেন, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এবং দক্ষ জনবল দিয়ে অত্যাধুনিক বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর উড়োজাহাজের ল্যান্ডিং গিয়ার রিপ্লেসমেন্ট এবং বোয়িং ৭৮৭ এর সি-চেক কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন করেছে। এতে প্রচুর অর্থ সাশ্রয় হয়েছে। বাংলাদেশে গমনাগমনকারী সব এয়ারলাইন্সকে বিমান গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং সেবা দিয়ে থাকে। বিমানের একটি দক্ষ এবং অত্যন্ত কার্যকর গ্রাউন্ড হ্যান্ডেলিং ইউনিট গড়ে তোলা হচ্ছে। চতুর্থ প্রজন্মের বিমান সংযুক্ত হওয়ায় যাত্রীদেরকে আকাশে ওয়াইফাই সুবিধাসহ বিভিন্ন ধরনের ইনফ্লাইট বিনোদন সেবা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ ভ্রমণের ক্ষেত্রে বিমান বন্দরগুলো পার্শ্ববর্তী শহরের যাত্রীদের আরামদায়ক গমনাগমনের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মনোরম কোচ সার্ভিস চালু করা হয়েছে।

তিনি বলেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের থার্ড টার্মিনালের নির্মাণ কাজ এগিয়ে চলছে। করোনার সময়েও কিন্তু এর নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়নি। কাজ অব্যাহত রয়েছে। উচ্চশক্তি সম্পন্ন রাডার আমরা স্থাপন করব, সেই ব্যবস্থা আমরা নিয়েছি। যেটা আমাদের বিমান চলাচলে, শুধু আমাদের বিমান না, আমাদের আকাশসীমা দিয়ে অন্য যত দেশের বিমান যাবে সবার জন্যই সেটা আমরা করে দিচ্ছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কক্সবাজার বিমান বন্দরকে আমরা সম্প্রসারণ করে আন্তর্জাতিকমানের বিমান বন্দর হিসেবে গড়ে তোলার পদক্ষেপ নিয়েছি। কারণ আমাদের এই বিমান বন্দর আন্তর্জাতিক রুটের মধ্যে পড়ে। যেজন্য এই জায়গায় আমাদের অনেক অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ আরও বাড়ানোর দরকার।

তিনি বলেন, মালদ্বীপে ইতিমধ্যে বেসরকারি খাত থেকে বিমান যাওয়া শুরু করেছে। আমি মনে করি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর সঙ্গে সব জায়গায় লাভ-লোকসান খতিয়ে দেখার দরকার নেই। কিন্তু যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু করা এবং কার্গো পরিবহন একান্তভাবে দরকার।