বহুল আলোচিত সাংবাদিক দম্পতি সাগর সারোয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ এবার নিয়ে ১১৩ বার পেছালো। আদালত নতুন করে আগামী ২৩ ডিসেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন ধার্য করেছেন।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) নির্ধারিত তারিখে তদন্ত প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হক এ নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন। মামলাটি বর্তমানে তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ভোরে ঢাকার পশ্চিম রাজাবাজারের নিজ বাসায় মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সারোয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেই ঘটনার পর রুনির ভাই নওশের আলম রোমান শেরেবাংলা নগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
প্রথমে মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান থানার এক উপ-পরিদর্শক (এসআই)। তবে চার দিন পর এটি হস্তান্তর করা হয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে। ডিবি প্রায় দুই মাস তদন্ত চালিয়েও হত্যার কোনো রহস্য উদঘাটন করতে ব্যর্থ হয়।
হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল মামলাটি র্যাবের কাছে হস্তান্তর করা হয়। র্যাব দীর্ঘদিন ধরে তদন্ত চালালেও হত্যার রহস্য উদঘাটনে তেমন অগ্রগতি দেখাতে পারেনি। এরই মধ্যে ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বেঞ্চ র্যাবকে এই মামলার তদন্ত দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়।
বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি মুহাম্মদ মাহবুব উল ইসলামের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন একটি টাস্কফোর্স গঠনের নির্দেশ দেন। টাস্কফোর্সকে ছয় মাসের মধ্যে একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথাও বলা হয়।
দীর্ঘ ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে মামলাটি একাধিক সংস্থার হাত ঘুরলেও এখনো তদন্ত সম্পন্ন হয়নি। বারবার তারিখ পেছানো ও তদন্তের অগ্রগতিহীনতায় ক্ষোভ বাড়ছে সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে।
সাগর-রুনি হত্যার বিচার কবে হবে, এ নিয়ে আজও প্রশ্ন রয়েই গেছে। নতুন করে নির্ধারিত ২৩ ডিসেম্বরের তারিখে তদন্ত প্রতিবেদনের জমা দেওয়া হবে কি না, সেটি সময়ই বলে দেবে।
বায়ান্ন/এসএ/এএস
