দেশের দ্বিতীয় বৃহতম মহাসড়ক ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক। ঈদসহ যেকোন উৎসবের ছুটিতে এ মহাসড়কে যানজট এবং ভোগান্তি নিয়মিত ব্যাপার। বিগত দুই বছর ধরে পুলিশ প্রশাসনের নানা উদ্যোগে যানজট কমে গেলেও এবার ঈদের যানজটের আশংকা করছেন অনেকেই। তবে সাধারণ মানুষকে ভোগান্তি ছাড়াই ঘরে পৌঁছে দিতে রয়েছে চলছে নানা প্রস্তুতি।
জানা যায়, উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড। এ মহাসড়ক দিয়ে ময়মনসিংহ ও উত্তরবঙ্গের কমপক্ষে ২৩ টি জেলার মালবাহী-যাত্রীবাহী যানবাহন চলাচল করে। স্বাভাবিক ভাবে প্রতিদিন গড়ে ১৮-২০ হাজার যান বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে পারাপার হয়। কিন্তু ঈদে এর সংখ্যা দাঁড়ায় ৪৫-৫০ হাজারে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গাজীপুরের চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত চার লেনের মহাসড়ক। এরপর এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার দুই লেনের মহাসড়ক। ফলে ঈদে যানবাহনের অত্যাধিক চাপে এ সড়ক টুকুতে যানজট লাগে। বর্তমানে এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু মুখী চার লেনের কাজ চলছে। এদিকে এলেঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে জনসাধারনের পারাপারের জন্য ফুটওভার ব্রীজটিও অপসারন করা হয়েছে।
এলেঙ্গা পৌরসভার মেয়র নূর এ আলম সিদ্দিকী বলেন, এবার কিছুটা যানজটের শংকা রয়েছে। বাসস্ট্যান্ডের ফুটওভার ব্রীজটি ভেঙে ফেলার কারনে মানুষের পারাপারের সময় লাগবে। ফলে যানজট ও ঘরমুখো মানুষের ভোগান্তি হতে পারে। আমরা পুলিশ প্রশাসনের সাথে মিটিং করেছি। পৌরসভার পক্ষ থেকে অন্যবারের মতো এবারো সার্বিক সহযোগিতা করা হবে। আমাদের স্বেচ্ছাসেবক সদস্যরা মহাসড়কে কাজ করবে।
মহাসড়কের চলাচলকারী উত্তববঙ্গের বাস চালক আতোয়ার রহমান বলেন, ঈদে এলেঙ্গা থেকে সেতু পর্যন্ত ধীরগতি, যানজট ও ভোগান্তি লেগেই থাকে। আমরা ঘন্টার পর ঘন্টার বাসে বসে থাকি। মানুষের কষ্টের সীমা থাকেনা। তার মধ্যে এবার এলেঙ্গায় ফুটওভার ব্রীজ নেই এবং রাস্তায় কাজ চলছে। তবে পুলিশের সার্ভিস ভাল।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ বঙ্গবন্ধু সেতুর দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল পাভেল বলেন, ঈদে স্বাভাবিকের তুলনায় তিনগুণ বেশি যানবাহন চলাচল ও পারাপার হয়। সেতুর পশ্চিম পাশে গাড়ী টানতে না পারায় সেতুর পূর্বদিকে যানজট হয়। এলেঙ্গার চলমান কাজ ঈদের আগেই বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে পরিকল্পনা অনুযায়ী ঠিকঠাক থাকলে যানজট ভোগান্তি হবে না।
ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টাঙ্গাইল উত্তর) রফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, চন্দ্রা থেকে এলেঙ্গা পর্যন্ত চার লেনের সুবিধা থাকায় গাড়ীগুলো দ্রæত গতিতে আসে। কিন্তু এলেঙ্গা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পর্যন্ত দুই লেন থাকায় ধীর গতিতে চলে। সাথে অতিরিক্ত গাড়ীর চাপ ও সড়কে যানবাহন বিকল হওয়ায় সেতু থেকে এলেঙ্গা যানজট হয়। ঈদে ঢাকামুখী যানগুলো ভূঞাপুর হয়ে এলেঙ্গা উঠবে এবং উত্তরবঙ্গগামী যানগুলো একপাশে চলবে। ফলে আশা করি যানজট হবে না।
টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার জানান, ঈদে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও মহাসড়ক স্বাভাবিক রাখতে নানা প্রস্তুতি রয়েছে এবং মতবিনিময় সভা করেছি। সড়ক বিভাগ, সেতু কর্তৃপক্ষ ও পৌর মেয়রের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। দুটি বিকল্প সড়ক ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে। সার্ভিস লেনে চলাচলরত থ্রি হুইলারসহ ছোট যানবাহন ঈদের পাঁচ দিন আগে থেকেই মহাসড়কে উঠতে দেওয়া হবে না। ঘরমুখো মানুষ যাতে নির্বিঘেœ বাড়ি ফিরতে পারেন সেজন্য মহাসড়কে সাত শতাধিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করবেন।