খুলনার ফুলতলা দামোদর এম এম মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে রোববার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় পিঠা মেলায় মেয়েদের ইভটিজিং এর প্রতিবাদ করায় বহিরাগত বখাটেদের ছুরিকাঘাতে বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী দুই ছাত্র গুরুতর জখম হয়েছে। জখমকৃত শিক্ষার্থী তামিম মাহমুদ (১৭) ও রউফুল কায়েস ঈশান (১৬) কে গুরুতর অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা বহিরাগত সন্ত্রাসী হাসিব শেখ (২০) ও বাধন মিনা (১৮) কে আটকে রেখে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ উপলক্ষে দামোদর এম এম মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে ৩ দিনব্যাপী পিঠা মেলা শুরু হয়। রোববার দুপুর ১২টার দিকে বহিরাগত ৪ যুবক মেলার মাঠে মেয়েদের উত্যক্ত করে। বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রতিবাদ করলে বহিরাগত বখাটেরা কৌশলে তাদেরকে স্কুলের পিছনে বাথরুমের কোনায় নিয়ে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। এতে দামোদর গ্রামের তৌহিদ আজম বুলবুলের পুত্র রউফুল কায়েস ঈশানের পিঠে ও কোমরে এবং একই গ্রামের মৃত আব্দুল খালেকের পুত্র তামিম মাহমুদ তামিমের মাথা ও কপালে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হলে তারা মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। শিক্ষার্থীরা তাদের দ্রুত উদ্ধার করে ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। তবে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
অপর দিকে শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থল থেকে ফুলতলার পাড়িয়ারডাঙ্গা গ্রামের বিল্লাল শেখের পুত্র হাসিব শেখ (২০) কে ধারালো সেভেনগিয়ার (চাকু) সহ এবং তার সঙ্গী একই গ্রামের শাহাজাহান মিনার পুত্র বাধন মিনা ওরফে বাদল (১৮) কে ধরে গণপিটুনি দিতে থাকে। তবে তাদের সহযোগী অপর দুই যুবক পালিয়ে যায়। এ সময় স্কুল কর্তৃপক্ষ ধৃত হাসিব ও বাধনকে উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের হাত থেকে রক্ষা করে অফিস কক্ষে আটকে রাখে। এলাকাবাসী প্রতিশোধ পরায়ন হয়ে আটকদের তাদের হাতে তুলে দেয়ার দাবিতে স্কুল গেট ভেঙে ফেলে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং আটক দুই বখাটেকে থানায় নিয়ে যায়। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলার প্রস্তুতি চলছিল।
ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যালয়ে কোন সিসি ক্যামেরা না থাকায় বিষয়টি সবার নজর এড়িয়ে যায়। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম এ হালিম বলেন, আহত দুই শিক্ষার্থী এবার এসএসসি পরীক্ষার্থী। ঘটনার সময় ছুটিতে থাকায় স্কুলে ছিলাম না। তবে ঘটনাটি শুনে দ্রুত স্কুলে আসি এবং আহতদের চিকিৎসার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হচ্ছে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান খান বলেন, ঘটনায় ব্যবহৃত চাকুসহ দুই যুবককে আটক করা হয়েছে। বাকিদেরও আটকের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/পিএইচ