ঢাকা, সোমবার ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

চরফ্যাশনে শহররক্ষা বাঁধের মাটি ইটভাটায় বিক্রি

ভোলা প্রতিনিধি | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ২২ এপ্রিল ২০২২ ০২:১৬:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

ভোলার চরফ্যাশনে মেঘনা নদীভাঙন কবলিত এলাকার শহররক্ষা বাঁধ প্রকল্পের মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নদী ও বাঁধের মধ্যবর্তী প্রকল্প এলাকা থেকে মাটি কাটার ফলে কয়েক কোটি টাকার প্রকল্প ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।

সরজমিনে দেখা গেছে, চরফ্যাশন উপজেলার মাদ্রাজ ইউনিয়নের বেতুয়া লঞ্চঘাট থেকে সামরাজ মৎস্যঘাট পর্যন্ত প্রায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে শহর রক্ষায় সিসি ব্লক, জিওব্যাগ ও ড্রেজিং প্রকল্পের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ওই প্রকল্প এলাকায় নির্মাণাধীন বাঁধের তীর থেকে হামিদপুর ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতা মোস্তফা, সামসুদ্দিন দেওয়ান ও সাত্তার সুমনসহ বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী মাটি কেটে বিক্রি করেছেন উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায়। প্রতি ট্রাক মাটি বিক্রি হচ্ছে এক থেকে দেড় হাজার টাকায়। মাটিকাটা শ্রমিক জাহের জানান, মাটি কেটে ট্রাকে ভর্তি করার কাজে দৈনিক ৩৫০ টাকা করে পাওয়া যায়। এর বাইরে আর কিছু জানি না। অভিযুক্ত সামসুদ্দিন দেওয়ান ও মোঃ সাত্তারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

তবে অভিযুক্ত মোস্তফা জানান, নদী ভাঙ্গনে বিলীন হওয়ার পর শহররক্ষা বাঁধ সিসি ব্লক সংলগ্ন এলাকায় তার পারিবারিক কিছু জমি রয়েছে। তাই প্রয়োজনে ওই জমির মাটি কেটে বিক্রি করছেন। তিনি স্থানীয় শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে ট্রাক ভর্তি করে দেন। বিনিময়ে তিনি প্রতি ট্রাক মাটির দাম ২ হাজার টাকা করে নেন। বিভিন্ন ইটভাটার মালিকরা ইট তৈরির জন্য মাটি তার কাছ থেকে কিনে নেন। স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, পুরোনো বেড়িবাঁধসহ বাঁধের জন্য পূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) অধিকরণকৃত জমি নদীতে হারিয়ে গেছে। এখন পানি উন্নয়ন বোর্ড নতুন করে শহররক্ষা বাঁধ প্রকল্প শুরু করলেও প্রকল্পের জন্য কোনো জমি অধিগ্রহণ করেনি। ফলে কোটি কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে ব্যক্তি মালিকানাধীন জমির ওপর দিয়ে। এই সুযোগে জমির প্রকৃত মালিকরা কেউ মাটি কেটে নিচ্ছেন আবার কেউ কেউ দখল করে পাকা ঘর-বাড়ি নির্মাণ করছেন। এসব কারণে গোটা প্রকল্প চরম ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-২ এর উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মিজানুর রহমান জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকল্প এলাকার নদীর পাড় সংরক্ষণ ও বন্যা প্রতিরক্ষা বাঁধের সিসি ব্লকের তীর থেকে মাটি কাটা হলে তা প্রকল্পের জন্য হুমকি হবে। সরজমিনে পরিদর্শন করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকার ইমন জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বক্তব্য দেয়া পর্যন্ত শেষ, পরে তারা মাটি চোরদের কাছ থেকে অর্থ সুবিধা নিয়ে বলবে, কারা মাটি কেটেছে তাদেরকে খুজে পাওয়া যায়নি।