মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের দশঘরি গ্রামের অতিদরিদ্র ও অসুস্থ আমিন আলী (৮০)। প্রায় ১২ বছর থেকে পাচ্ছেন বয়স্ক ভাতা। ভাতার টাকায় তার ওষুধ চলে। প্রায় পাঁচ মাস ধরে ভাতা বন্ধ রয়েছে। ভাতা বন্ধ হওয়ার কারণ খুঁজতে উপজেলা সমাজসেবা অফিস ও ব্যাংকে দৌঁড়ঝাপ দিয়েও কুলকিনারা পাননি।
অবশেষে গত মঙ্গলবার পুরনো ভাতার বহি হাতে নিয়ে সমাজসেবা অফিসে গিয়ে জানতে পারেন তিনি গত বছরের ৮ অক্টোবর মারা গেছেন!
স্থানীয় ইউপি সদস্য শহিদ মিয়া তার মৃত্যুসনদ দিয়ে একই গ্রামের লবনী কান্ত দাস নামক ব্যক্তিকে প্রতিস্থাপনের আবেদন করেছেন। এ খবর শূনে কর্মকর্তার কার্যালয়েই তিনি হাইমাউ করে কেঁদে ওঠেন। তিনি আইন আদালতের কাছে ওই ইউপি সদস্যের বিচার চান।
ভুক্তভোগী বৃদ্ধ আমিন আলী অভিযোগ করেন, ইউপি সদস্য শহিদ মিয়া অজ্ঞাত কারণে দীর্ঘদিন ধরে তাকে নানাভাবে হয়রানি করছেন। ৫ থেকে ৬ মাস ধরে ভাতা না পাওয়ায় কয়েকদিন উপজেলা সমাজসেবা অফিস ও ব্যাংকে গিয়েও কোনো কারণ খুঁজে পাননি। কর্মকর্তা ভাতার বহি নিয়ে যোগাযোগ করতে বলায় মঙ্গলবার সেখানে যান। উপজেলা সমাজসেবা অফিসার অনেক খোঁজাখুঁজির পর দেখতে পান ইউপি সদস্য শহিদ মিয়া তার (আমিন আলী) মৃত্যুসনদ দিয়ে লবনী কান্ত দাস নামে তার (ইউপি সদস্যের) পছন্দের এক ব্যক্তিকে প্রতিস্থাপনের কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। তার এই সর্বনাশের জন্য তিনি ইউপি সদস্যের শাস্তি দাবি করেন।
বড়লেখা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘বৃদ্ধ লোকটি নানা রোগে আক্রান্ত। চলাফেরায় কষ্ট হয়। কোন কাগজ ছাড়াই ভাতার খোঁজখবর নিতে আসেন। পরে বহি নিয়ে আসলে দেখতে পাই উনার মৃত্যুসনদ দিয়ে ইউপি সদস্য শহিদ মিয়া আরেকজনকে প্রতিস্থাপন করতে কাগজপত্র জমা দিয়েছেন। জীবিত ভাতাভোগীকে মৃত দেখানো অমানবিক, মারাত্মক অন্যায় ও অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। ওই বৃদ্ধের ভাতা বহালের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
এ ব্যাপারে সুজানগর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্য শহিদ মিয়া বলেন, ‘তিনি ভুলবশত আমিন আলীর অপর ভাতাভোগী ভাইয়ের মৃত্যুসনদটি দিয়েছেন, এটা ঠিক হয়নি।’ বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি না করার অনুরোধ জানান।