নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ডাটা সেন্টারে সংরক্ষিত ১১ কোটির বেশি বাংলাদেশি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া ডাটা সেন্টারের সাবেক পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহকে বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) আদালতে হাজির করা হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে পুলিশ পরবর্তীতে তার রিমান্ড চাইবে বলে দৈনিক বায়ান্নকে নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আবু হানিফ।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে নেওয়া হয় তাকে।
এ ঘটনায় আরও কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে তদন্তের আওতায় আনা হয়েছে। এর মধ্যে সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকও রয়েছেন, যিনি বর্তমানে অন্যান্য মামলায় গ্রেপ্তার ও রিমান্ডে আছেন। এনআইডি তথ্য বিক্রির অভিযোগে তাকে এবং আরও ১৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম সজীব ওয়াজেদ জয় ও তারেক এম বরকতউল্লাহ।
মামলাটি সাইবার নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা হয়, যা মঙ্গলবার (০৮ অক্টোবর) রাতে রাজধানীর কাফরুল থানায় এনামুল হক নামের এক ব্যক্তি দায়ের করেন। মামলায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সব জাতীয় পরিচয়পত্রধারী নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য চুরির অভিযোগ রয়েছে।
ডিএমপি সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর নির্বাচন কমিশন ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির ভিত্তিতে ১১ কোটির বেশি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যের মিরর কপি তৈরি করে কম্পিউটার কাউন্সিলকে হস্তান্তর করা হয়। চুক্তি অনুযায়ী, এই তথ্য কাউন্সিলের জন্য সংরক্ষিত ছিল এবং তা বিনিময় বা বিক্রয়ের অনুমতি ছিল না। কিন্তু ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিস লিমিটেড নামক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের হাতে এই মিরর কপি তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ডিএমপি আরও জানিয়েছে, ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিস লিমিটেড এসব তথ্য ১৮০টিরও বেশি দেশি-বিদেশি, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করেছে। এর মাধ্যমে ২০ হাজার কোটি টাকার ই-ট্রানজেকশনের তথ্য পাওয়া গেছে, যা ব্যক্তিগত তথ্যের অপব্যবহার এবং দেশের সাইবার নিরাপত্তার জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এই ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি তদন্ত আরও গভীরভাবে চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।