চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর নতুন কমিটির পদ পেতে জোর তৎপরতা ও লবিং শুরু করেছে বাঁশখালীর বেশ কয়েকজন নেতা। পাশাপাশি নেতাদের নিজ নিজ কর্মী সমর্থকরা ফেসবুক সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রিয় নেতাকে সভাপতি হিসেবে চাই কিংবা সেক্রেটারী পদে চাই লিখে সরগরম রেখেছে আলোচনার মাঠ। এসআলমের গাড়ি কান্ডের ঘটনার আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বাধীন কমিটি বিলুপ্ত করা ছাড়াও জেলার শীর্ষ ৩ নেতার পদ স্থগিত হয়ে যায়। এর পরই আলোচনায় আসে দক্ষিণ জেলা বিএনপির কমিটি নবায়নের বিষয়টি। ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যান্য উপজেলার পাশাপাশি বাঁশখালীর বেশ কয়েকজন নেতা সভাপতি, সেক্রেটারী, আহবায়ক, সদস্য সচিবসহ শীর্ষ পদ পেতে তদবীর লবিং ও তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে শুনা যাচ্ছে।
বাঁশখালীর প্রবীণ বিএনপি নেতা ও সাবেক পৌর মেয়র কামরুল ইসলাম হোসাইনী ও গন্ডামারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও কারা নির্যাতিত বিএনপি নেতা লেয়াকত আলীর পক্ষে নেতাকর্মীদের বেশ সরব দেখা যাচ্ছে। তাছাড়া সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রনেতা ইফতেখার হোসেন চৌধুরী মুহসিন, প্রবীণ বিএনপি নেতা শাখাওয়াত জামাল দুলাল, সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান চৌধুরী, সাবেক চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিল, মরহুম আলহাজ্ব জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর দুই সন্তান জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর ও মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পাসহ বেশ কয়েকজনের নাম আলোচিত হচ্ছে। বাঁশখালীতে বিগত আওয়ামী লীগের সময়ে এমনকি ১/১১ এর সময়েও সবচেয়ে বেশি নির্যাতন ও হামলা মামলার শিকার হয়েছেন চেয়ারম্যান আমিন। এমনকি ১১ হত্যার মত চাঞ্চল্যকর মামলায় ফাঁসিয়ে চেয়ারম্যান আমিনকে এলাকা ছাড়া ও সর্বশান্ত করার অভিযোগ আছে। তার সমর্থকরা মনে করেন এবার দল ত্যাগী এই নেতাকে মুল্যায়ন করবেন।
সুত্র জানায়, খুব শীঘ্রই চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির কমিটি নবায়ন হতে পারে। সেখানে বাঁশখালীর বেশ কয়েকজন নেতা শীর্ষ পদ লাভের চেষ্টা করছেন। কোন কারণে সভাপতি, সম্পাদক, আহবায়ক, সদস্য সচিব পদ না পেলেও আলোচিত নেতারা জেলার গুরুত্বপূর্ণ পদ পাচ্ছেন এটা অনেকটাই নিশ্চিত। বিশেষ করে ইফতেখার মুহসিন, সাখাওয়াত জামাল দুলাল, আমিনুর রহমান চৌধুরী, কামরুল ইসলাম হোসাইনী এবং লেয়াকত আলী আগেও একাধিকবার দক্ষিণ জেলা বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
সাবেক ছাত্রদল নেতা ইন্জিনিয়ার শাহনেওয়াজ চৌধুরী জানান, দক্ষিণ জেলা বিএনপির কমিটিতে এবার গুরুত্বপূর্ণ পদে বাঁশখালীর নেতারাই আসবেন এমনটাই প্রত্যাশা নেতাকর্মীদের। বিশেষ করে সভাপতি এবং সেক্রেটারী পদের যে কোন একটিতে বাঁশখালীর যে কোন একজন স্থান পাবে বলে আমরা আশা করি।
এই বিষয়ে দক্ষিণ জেলা বিএনপির অন্যতম নেতা কামরুল ইসলাম হোসাইনী জানান, দল যেটা সিদ্ধান্ত নেন আমরা সেটা মেনে নেব। দলের একজন নিবেদিত প্রাণ কর্মী হিসেবে নেতাকর্মীদের চাওয়া পাওয়া থাকতে পারে। অনেকেই আমাকে পছন্দ করে ফেসবুক সোশ্যাল মিডিয়া ভাসাচ্ছেন। আমার জন্য পদ বড় কথা নয়, দল ও দেশের জন্য কাজ করতে পারাটাই হচ্ছে বড় কথা।
তিনি আরো বলেন, যারা স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলন এবং ১/১১এর সময় থেকে ফ্যাসিবাদ এবং নব্য স্বৈরাচার শেখ হাসিনা বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়ে ধারাবাহিক ভাবে ছাত্র নেতা থেকে বিএনপিতে এসেছেন, সর্বোপরি রাজনৈতিক এবং সামাজিকভাবে বিতর্কিত নন,স্বচ্ছ ইমেজের অধিকারী তাদেরকে নিয়ে কমিটি গঠন করা হোক এটাই সকলের প্রত্যাশা।
চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান চৌধুরী জানান, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার হাত ধরে আমি বিএনপিতে যোগদান করেছি। সাবেক প্রয়াত এমপি জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বিএনপিতে সক্রিয় হওয়ার আগ থেকেই আমি বিএনপিতে সক্রিয়। দলের কঠিন সময়গুলোতে আমি জীবনবাজি রেখে কাজ করেছি। এবার দল আমাকে মুল্যায়ন করবে বলে আশাবাদী।
চেয়ারম্যান লেয়াকত আলী জানান, আমি বিগত দিনে জেল জুলুম নির্যাতন সহ্য করেছি। নেতাকর্মীরা সেজন্য আমার অজান্তে প্রচারণা চালাচ্ছেন। আশা করি দল নেতাকর্মীদের চাওয়া এবং আমার ত্যাগের মুল্যায়ন করবেন।