জাতীয় নেতা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের পর আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে স্থান পেয়েছিলেন প্রয়াত প্রতিমন্ত্রী ডা. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন। ১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে তিনি দল ত্যাগ করে সেই পদটি হারিয়েছিলেন।
পরে দলে ফিরে রাজশাহী-৫ (বর্তমানে রাজশাহী-৬) আসনে এমপি ও প্রতিমন্ত্রী হলেও প্রেসিডিয়ামে স্থান আর হয়নি। প্রতিমন্ত্রী থাকা অবস্থায় তিনি ভারতে চিকিৎসা নিতে গিয়ে মারা যান। এরপর থেকে আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী এই ফোরামে আর কারও জায়গা হয়নি।
তবে দীর্ঘ ২৫ বছর পর আবারও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়ামে স্থান পেলেন জাতীয় চারনেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের সন্তান, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটিতে দুইবার সদস্য ছিলেন। সবশেষ সম্মেলনে তাকে প্রেসিডিয়ামে রাখার দাবি তুলেছিলেন রাজশাহীর নেতারা। কিন্তু তাকে সদস্যও রাখা হয়নি। অবশেষে শুক্রবার তাকে প্রেসিডিয়ামে নেওয়া হলো।
রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান বাদশা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানেন, কখন কাকে কোথায় মূল্যায়ণ করতে হবে। আমরা দাবি তুলেছিলাম আগের দুটি সম্মেলনের সময়। নেত্রী এখন যোগ্য মনে করেছেন, তাই খায়রুজ্জামান লিটনকে প্রেসিডিয়ামে নিয়েছেন। লিটনের এই অন্তর্ভুক্তি রাজশাহীর জন্য সম্মানের।’
রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা বলেন, ‘তিনি (লিটন) এ অঞ্চলের অভিভাবক। তার এই অন্তর্ভুক্তি রাজশাহীর রাজনীতিকে আরও গতিশীল করবে। ২৫ বছর পর রাজশাহীর কোনো নেতার এই সম্মান নিশ্চয় আনন্দের।’
প্রসঙ্গত, এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন রাজনীতিবিদ। তিনি বর্তমানে রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন। জাতীয় চার নেতার অন্যতম শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের ছেলে তিনি।
২০০৮ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত রাজশাহী সিটি করপোরেশনে মেয়র ছিলেন খায়রুজ্জামান লিটন। এর পর ২০১৮ সালে পুনরায় তিনি মেয়র নির্বাচিত হন।
খায়রুজ্জামান লিটন ১৯৫৯ সালের ১৪ আগস্ট রাজশাহী জেলার কাদিরগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। খায়রুজ্জামান লিটন রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর ১৯৭৬ সালে রামকৃষ্ণ মিশন বিদ্যাপীঠ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। এরপর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির বিভাগে ভর্তি হন এবং ১৯৭৯ সালে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। এরপর ১৯৮৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিদ্যায় স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৮৫ সালে তিনি তিনি বার কাউন্সিলের সদস্য হন।
খায়রুজ্জামান লিটন ১৯৮৪ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতি শুরু করেন। ১৯৯৬ সালে সপ্তম এবং ২০০১ সালে অষ্টম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-২ (পবা-বোয়ালিয়া) আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেন।