ঢাকা, শুক্রবার ১৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১লা ফাল্গুন ১৪৩১

পৃথিবীতে সম্ভবত ড. ইউনূসই একমাত্র নেতা, যার এত যোগ্যতা রয়েছে: পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট

সালেহ্ বিপ্লব | প্রকাশের সময় : রবিবার ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ০২:২২:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট জোসে রামোস হোর্তা। তিনি বলেন, পৃথিবীতে সম্ভবত ড. ইউনূসই একমাত্র নেতা, যার এত যোগ্যতা রয়েছে।

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে রামোস আরো বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের শতাধিক ডিগ্রি রয়েছে, যা বিস্ময়কর। পৃথিবীতে সম্ভবত তিনি একমাত্র নেতা, যিনি এত সম্মানিত এবং এমন শক্তিশালী একাডেমিক যোগ্যতা রয়েছে।

পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট বলেন, সামনের দিনে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনীতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও বাড়াতে আগ্রহী।

সফররত প্রেসিডেন্ট রোববার সকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে গেলে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একান্ত বৈঠকের পর দুদেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয় দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। উভয় নেতার উপস্থিতিতে দুই দেশের ডিপ্লোমেটিক এবং অফিসিয়াল পাসপোর্ট হোল্ডারদের মধ্যে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি এবং দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়েছে। এরপর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা। 

চার দিনের সফরে শনিবার রাতে ঢাকায় এসেছেন পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট জোসে রামোস হোর্তা। হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে হোর্তাকে স্বাগত জানান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় বিমানবন্দরে পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্টকে লাল গালিচা অভ্যর্থনা দেওয়া হয়। 

শনিবার রাত সাড়ে ১০টার পর সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকায় এসে পৌঁছান তিনি। রামোস-হোর্তাকে বিমানবন্দর থেকে সরাসরি প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়, সফরকালে তিনি এখানেই থাকবেন। ১৪ থেকে ১৭ ডিসেম্বর ঢাকায় অবস্থানকালে তিমুর-লেস্তের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ১৯ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল তার সঙ্গে থাকবেন।

পুর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট দুই দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার লক্ষ্যে একাধিক উচ্চ-পর্যায়ের বৈঠক ও ইভেন্টে অংশ নেবেন। 

বিকেলে রামোস-হোর্তা বাংলাদেশে তিমুর-লেস্তের অনারারি কনসাল কুতুবউদ্দিন আহমেদ এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি ও বিএনপি নেতা তাবিথ আউয়ালের সঙ্গে দেখা করবেন।

তৃতীয় দিন, ১৬ ডিসেম্বর, তিমুর-লেস্তের প্রেসিডেন্ট বঙ্গভবনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তিনি সাভারে জাতীয় শহীদ স্মৃতিসৌধও পরিদর্শন করবেন।

রামোস-হোর্তা ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বিজয় উপলক্ষে ৫৪তম বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

সফরের শেষ দিনে ১৭ ডিসেম্বর তিমুর-লেস্তের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড র্স্ট্যাটেজিক স্টাডিজ (বিআইআইএসএস) মিলনায়তনে ‘সমসাময়িক বিশ্বে শান্তির চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ে বক্তৃতা দেবেন।

তিনি বাংলাদেশি ছাত্র ও তরুণ নেতাদের সাথে মতবিনিময় করবেন। তার দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা, জনগণের ভূমিকা এবং তিমুর-লেস্তের স্বাধীনতা-উত্তর আকাক্সক্ষা শেয়ার করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ও তিমুর-লেস্তের মধ্যে কূটনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদারের লক্ষ্যে তার সফর শেষ করে রামোস-হোর্তা এরপরে ঢাকা ত্যাগ করবেন।

বায়ান্ন/এসবি/একে