বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব প্রয়াত হারিছ চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে যে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে, তা তদন্ত করছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। প্রয়োজনে হারিছ চৌধুরীর ডিএনএ টেস্ট করা হবে বলে জানিয়েছে ডিবি।
বুধবার (১৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান ডিবিপ্রধান অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
ডিবিপ্রধান বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে এটা নিয়ে কাজ করছি। পত্রিকায় খবর এসেছে। মরদেহ ডিজেন্টার (মরদেহ উঠিয়ে নমুনা সংগ্রহ) করলে বা ডিএনএ টেস্ট করলে সঠিক তথ্য পাওয়া যাবে। এ বিষয়ে তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানানো হবে।’
এদিকে, মরদেহ কবর থেকে তুলে ডিএনএ পরীক্ষার আবেদন জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক উপদেষ্টা হারিছ চৌধুরীর মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা চৌধুরী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে চিঠি পাঠিয়ে এ আবেদন জানান যুক্তরাজ্য প্রবাসী সামিরা।
চিঠিতে ব্যারিস্টার সামিরা চৌধুরী বলেন, ‘হারিছ চৌধুরীর আসল পরিচয়ের বিষয়টি পরিবারের পাশাপাশি বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। তাই বাংলাদেশের আইন বিভাগ যদি ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে আমরা পিতার পরিচয় নিশ্চিত করতে চায়, তাহলে আমার কোনো আপত্তি নেই।’
একইসঙ্গে হারিছের দেহাবশেষ সিলেটের দর্পননগর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের ব্যবস্থা করার অনুরোধও জানান সামিরা। একই আবেদন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্র সচিব এবং সিআইডি প্রধানের কাছে পাঠিয়েছেন হারিছ চৌধুরীর মেয়ে।
অন্যদিকে হারিছ চৌধুরীর স্বজনরা বলছেন, হারিছ চৌধুরীই তার নাম-পরিচয় গোপন করে মাহমুদুর রহমান সেজেছেন। ওই পরিচয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রও তৈরি করেন। ইন্টারপোলের রেড নোটিশধারী হারিছ সব গোয়েন্দার চোখে ধুলো দিয়ে প্রায় ১১ বছর ঢাকায় অবস্থায় করছিলেন।
গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর হারিছ চৌধুরী ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে মারা যান। পরদিন মাহমুদুর রহমান পরিচয়ে হারিছকে ঢাকার সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের জালালাবাদের কমলাপুর এলাকায় জামিয়া খাতামুন্নাবিয়্যীন মাদরাসার কবরস্থানে দাফন করা হয় বলেও দাবি করা হয়।
তবে হারিছ চৌধুরীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত না হওয়ায় আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলে তার নামে যে রেড ওয়ারেন্ট আছে, তা এখনো ঝুলছে।