- পিতা-পুত্রের বিপরীতমুখী রাজনৈতিক অবস্থানে তোলপাড়।
- আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ শেষ হলেও আলোর মুখ দেখেনি পূর্ণাঙ্গ কমিটি
ফের আলোচনার ঝড় তুলেছে উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগ৷ বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তের একবছর পরে তিন মাসের জন্য আহ্বায়ক কমিটি দিলে সেখানেও দেখা যায় বিএনপির ছেলে ও অছাত্র৷ আহ্বায়ক কমিটির মেয়াদ গত জুন মাসে শেষ হলেও এখনো ঘুম ভাঙেনি কতৃপক্ষের৷ এদিকে উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের পিতা ফিরোজ আহমদ গত ১ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে র্যালী প্রথম সারিতে সরকার বিরোধী স্লোগান দিতে দেখা গেছে৷ এ নিয়ে আওয়ামী ঘরনা রাজনীতিতে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষোভ বিরাজ করছে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মাঝে।
জানা যায়, জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র ৪৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে উখিয়ার কোটবাজার ষ্টেশনে ব্যানারের সামনে দাঁড়িয়ে এক আনন্দ র্যালী নিয়ে সমাবেশে যোগদিতে ভিডিওতে দেখা যায় উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের পিতা ফিরোজ আহমদ৷ এ নিয়ে চলছে তুমুল সমালোচনা।
উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জানিয়েছেন, আবু সুফিয়ানের পুরো পরিবার বিএনপি-জামায়াতের রাজনীতির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আবু সুফিয়ানের বাড়ি কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি ও উখিয়া-টেকনাফের বিএনপির সাবেক সাংসদ শাহ জাহাজ চৌধুরীর এলাকার রাজাপালং শেখা পাড়ায়৷ সরকার বিরোধী নানা কর্মকান্ডে বেশ সক্রিয় পরিবারটি৷ তাহলে তাদের সন্তনরা কোনদিনই জাতির পিতার হাতের গড়া ঐহিত্যবাহি সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কর্মী হতে পারেন না তারা অনুপ্রবেশকারী৷ ঐ সমন্ত মুখোশদারী ও অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান।
উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের সাথে মুঠোফোনে তার বাবা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি উল্টো থ্রেড দিয়ে অফিসে আছে বলে ফোন কেটে দেন৷ কিছুক্ষণ পরে তিনি আবার আমাকে উল্টো ফোন দিয়ে সাবেক ছাত্রলীগের নেতার সাথে কথা বলিয়ে দেন।"
উখিয়া উপজেলা বিএনপি নেতা আবুল হোসেন জানান, "আবু সুফিয়ানের পিতা ফিরোজ আহমদ আমার সাথে বিএনপির প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর আনন্দ র্যালী ও আলোচনা সভায় যায়৷ পরে আমার সাথে বাড়িতে চলে৷ তবে নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির অন্যনেতা বলেন, আবু সুফিয়ানের পিতা ফিরোজ আহমদ বিএনপির ওয়ার্ডের সভাপতি হতে মরিয়া হয়ে গেছে৷"
উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রত্নাপালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল হুদা জানান, এ ধরণের হাইব্রিড অনুপ্রবেশকারীদেরকে দলে সুযোগ দিলে ভবিষ্যৎ ভালো হবে না। এতে দলের ক্ষতি করার জন্য উঠেপড়ে লাগবে বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা।
উখিয়া ছাত্রলীগের আহ্বায়ক তারেক হোসেন মানিক জানান, "আবু সুফিয়ানের নামে একজন যুগ্ম আহ্বায়ক আছে, তাকে চিনি তবে তার পরিবার সম্পর্কে আমার জানা নেই৷ তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনানের অনুসারী তার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন৷"
কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন জানান, "এবিষয়ে এখনো আমাকে কোন অভিযোগ পাইনি তবে এধরণের কোনো কাজ করে থাকলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷"
উল্লেখ্য, উখিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তের একবছর পর তিন মাসের জন্য গত ৩১ মার্চ ২০২৩ তারিখ ২৬ জন বিশিষ্ট একটি আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ৷ সেখানে আবু সুফিয়ান ২০ নাম্বারে দেখা যায়। আহ্বায়ক কমিটি মেয়াদ শেষ হয়ে যায় জুন ২০২৩৷