ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

বাঞ্ছারামপুরে নয়ন হত্যা মামলায় প্রকৃত অপরাধীদের আড়ালের অভিযোগ, এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া,ক্ষোভ-অসন্তোষ

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া : | প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:৪৫:০০ অপরাহ্ন | চট্টগ্রাম প্রতিদিন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে বিএনপি কর্মী নয়ন হত্যা মামলায় প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করার অভিযোগ ওঠেছে। এনিয়ে এলাকায় মিশ্র পতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। স্থানীয়দের মাঝে বিরাজ করছে  চাপা ক্ষোভ-অসন্তোষ। মামলার খোদ বাদী (নিহতের পিতা) তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
 
 
মামলার বিবরণে জানা গেছে, বিগত ২০২২ সালের ১৯ নভেম্বর বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরে স্টিল ব্রীজের সামনে নয়নকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয়। কিন্তু সংসদ সদস্য, উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের বাঁধায় গত দুই বছর  থানায় মামলা পর্যন্ত করতে পারেনি নিহতের পরিবার। দেশের পটপরিবর্তনের পর মামলা করা হলেও রহস্যজনক কারণে হত্যার ঘটনায় জড়িত প্রকৃত অপরাধীদেরকেই আড়াল করার অভিযোগ ওঠেছে। এদের মধ্যে ঘটনাস্থলের আশেপাশের এলাকায় যেসব আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারা ছিলেন তারা হলেন বাঞ্ছারামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো.সিরাজুল ইসলাম, পৌরসভার মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তফাজ্জল হোসেন, সাবেক যুবলীগ সভাপতি ও ভাইস চেয়ারম্যান সাইদুল ইসলাম বকুল, সাবেক যুবলীগ সভাপতি মো. কবির হোসেন, জাকির হোসেন, সামন্ত রাজন প্রমুখ। তাদের কাউকেই নয়ন হত্যা মামলায় অভিযুক্ত না করায় এলাকার সর্বমহলেই বিষয়টি নিয়ে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। অথচ এই মামলায় উদ্দেশ্যেমুলক উপজেলার রূপসদী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. আনোয়ারুল হকসহ একাধিক নিরপরাধ লোককেও আসামী করা হয়েছে। ফলে আলোচিত এই নয়ন হত্যা মামলা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে চাপা ক্ষোভ-অসন্তোষ । 
 
 
মামলার বাদী নিহতের পিতা মো. রহমতুল্লাহ'র নিকট জানতে চাইলে মোবাইল ফোনে তিনি জানান, 'ঘটনার দিন আমি এলাকায় ছিলাম না। বিএনপি নেতা ড. কামাল দলীয় নেতাদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে আসামীদের নামের তালিকা করেছেন। এই হত্যাকাণ্ডে কে জড়িত, কে বাদ পড়েছে তাও বলতে পারবো না। তবে আমা তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানাই।'
 
 
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ.কে.এম মুছা (ভিপি মুছা) জানান, 'মামলার বিষয়ে দলীয়ভাবে কোনো আলোচনা করা হয়নি। হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলের আশেপাশের আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের রহস্যজনক কারণে আসামী করা হয়নি। তাদের সাথে আঁতাত করে অর্থের বিনিময়ে মামলা থেকে আড়াল করা হয়েছে।' বাঞ্ছারামপুর পৌর বিএনপির আহবায়ক এমদাদুল হক সাঈদ বলেন, 'মামলার বাদী এ বিষয়ে আমাদের সাথে কোনো আলোচনা করেনি। মামলায় যাদের নাম দেওয়ার কথা ছিলো, তাদের নাম নেই। এখন আইনগতভাবে যা হওয়ার তাই হবে।' মামলার আসামীদের তালিকা প্রস্তুতকারী বিএনপি নেতা ড. কামাল'র নিকট আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদেরকে মামলা থেকে আড়াল করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি 'আল্লাহ্ হাফেজ' বলে ফোনের লাইন কেটে দেন।
 
 
উল্লেখ, সাবেক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ.বি তাজুল ইসলামকে প্রধান আসামী করে ৪২ জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরো অন্যান্যদের আসামী করে নিহতের বাবা রহমত উল্লাহ্ বাদী হয়ে বাঞ্ছারামপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।